ষোলশহরে রেলপথ ও দুই নম্বর গেট মোড়ে সড়ক অবরোধ

৭ দাবি পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আড়াই ঘণ্টা তীব্র যানজট ম কক্সবাজারগামী ট্রেনে ভোগান্তি

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২১ মার্চ, ২০২৫ at ৮:৫৬ পূর্বাহ্ণ

ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর নিয়োগবিধি সংশোধন, ব্যবহারিক ক্লাসের প্রশিক্ষক পদের নাম ‘ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর’ না করাসহ সাতদফা দাবিতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন চট্টগ্রামের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে নগরের ষোলশহরে রেলপথ ও দুই নম্বর গেট মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন তারা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিক্ষোভে বন্ধ ছিল যান চলাচল। এ সময় তারা ঢাকা ছেড়ে আসা কক্সবাজারগামী ‘পর্যটক এক্সপ্রেস’ ট্রেন আটকে দেন। একইসঙ্গে রেললাইন সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে যানবাহন আটকে সড়কের উভয়পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। অবরোধের কারণে কক্সবাজারসহ দক্ষিণ চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও উত্তর চট্টগ্রামের রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আটকে পড়া ট্রেন ও সড়কে বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের গরমের মধ্যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। অপরদিকে সড়কে দীর্ঘ যানজটের কারণে সৃষ্টি হয় তীব্র ভোগান্তি। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে দুপুর আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক ও রেললাইন ছেড়ে যান।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল বেলা ১২টার দিকে নগরীর দুই নম্বর গেইট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন দেড় শতাধিক পলিটেকনিক শিক্ষার্থী। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, শ্যামলী, এমআইটিসহ বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচিতে যোগ দেন। এরপর রেলপথ অবরোধ করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির সমর্থনে বিভিন্ন স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীদের সাত দফা দাবি হলো, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক ডিপ্লোমা ডিগ্রি থাকতে হবে। ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরসহ সকল পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রদের জন্য সকল বিভাগীয় শহরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় অতি শিগগিরই স্থাপন করতে হবে। কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর চাকরির আবেদন বাস্তবায়ন করতে হবে। ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য প্রাইভেট সেক্টরে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করে দিতে হবে। জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ কোটা অনতিবিলম্বে বিলুপ্ত করতে হবে এবং অবিলম্বে অযৌক্তিক রায় বাতিল করে পূর্বের নিয়োগ পদ্ধতি বহাল রাখতে হবে। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা চার বছর কষ্ট করে যে ডিপ্লোমা পাশ করব। আর ওরা এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করে এসেছে আমাদের পড়াতে। ওরা কি জানে? ওরা ইঞ্জিনিয়ারিং এর কি জানে? ওরা সর্বোচ্চ ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি পড়াবে আর কি। ওদের কীভাবে ৩০ শতাংশ কোটা দেয়। শিক্ষার্থীরা জানান, জেনারেলে পড়ে যদি ওরাই আমাদের জায়গা নেই, তাহলে আমরা কেন ডিপ্লোমা পড়ছি। একজন এসএসসি পাশ করা ছেলে কীভাবে একজন ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীকে পড়াবে! এ যুক্তি মানা যায় না।

আটকে পড়া পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী আল আমিন বলেন, আমরা তো যাত্রী, সকাল ৬টার দিকে আমরা ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছি। রমজানের দিন খুব কষ্ট পাচ্ছি। আমরা রোজাদার। ছোট বাচ্চারা কষ্ট পাচ্ছে। আমরা প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে আটকে আছি। আরেক যাত্রী বলেন, সকাল ৬টায় ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে আমরা চট্টগ্রাম পৌঁছেছি সাড়ে ১১টার দিকে। আমরা যাব কক্সবাজার। আড়াই ঘণ্টার মতো এখানে আটকে আছি।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, দুই নম্বর গেটে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা কক্সবাজারগামী একটি ট্রেন আটকে দিয়ে আন্দোলন করছে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ট্রেনটি সেখানে আটকে আছে। ওই রুট দিয়ে নাজিরহাটগামী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনও চলাচল করে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের কিছু দাবি নিয়ে সড়ক অবরোধ করেছিল। দুই ঘণ্টা তারা সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। দুপুর আড়াইটার দিকে তারা সড়ক ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয় বলেও তিনি জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅপরাধমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় সিয়াম সাধনার ভূমিকা
পরবর্তী নিবন্ধসাগরে মাছ ধরায় নতুন সময়সীমা, নতুন সম্ভাবনা