মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার লাখাইছড়া চা বাগানে টিলা ধসে চার চা শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন; আহত হয়েছেন এক কিশোরী। জীবনমানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মজুরির দাবিতে চা শ্রমিকদের কর্মবিরতির মধ্যেই গতকাল দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন রীনা ভৌমিজ (২০), তার দুই জা পূর্ণিমা ভৌমিজ (২৫) ও হীরা ভৌমিজ (৩০) এবং পাশের বাড়ির রাধা মাহালী (৪৫)। আহত কিশোরী অঞ্জনা ভৌমিজকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
কালিঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রাণেশ গোয়ালা জানান, সামনে দুর্গাপূজা উপলক্ষে চা বাগানের নারীরা লাল, সাদা বিভিন্ন রকমের মাটি সংগ্রহ করে ঘর ও উঠান লেপন করেন। চা বাগানে ধর্মঘট থাকায় বাগানে কাজ ছিল না। এই সুযোগে শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে লাখাইছড়া চা বাগানের জঙ্গী টিলার এই নারী চা শ্রমিকরা পার্শ্ববর্তী উড়িষা টিলা থেকে মাটি সংগ্রহে যান। মাটি কেটে নিতে নিতে ওই টিলার নিচের দিকে কিছু অংশ ভিতরের দিকে গর্তের মতো হয়ে যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই অংশ থেকে তারা মাটি সংগ্রহের সময় হঠাৎ উপর থেকে মাটি ধ্বসে পড়ে। চারজন মাটির নিচে পুরোপুরি চাপা পড়েন আর কোমর পর্যন্ত মাটি চাপা থাকেন কিশোরী অঞ্জনা ভৌমিজ।
প্রাণেশ জানান, এ সময় অঞ্জনার চিৎকারে বাগানের লোকজন গিয়ে সবাইকে উদ্ধার করে; তাদের মধ্যে চার জনকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অঞ্জনা এখন সুস্থ আছেন বলে তিনি জানান।
অঞ্জনা ভৌমিজ সাংবাদিকদের জানান, উঠান লেপার জন্য তারা পাঁচ জন মিলে সেখানে মাটি আনতে যান। কিছু মাটি খোঁড়ার পর হঠাৎ টিলার উপর থেকে বড় এক চাকা মাটি ধসে পড়ে। তার সঙ্গে থাকা বাকি চারজন মাটির নিচে চাপা পড়েন। আর তার কোমর পর্যন্ত মাটির নিচে চাপা পড়ে।
ঘটনার পরপরই স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন, চা বাগান কর্তৃপক্ষ, শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে যান।
শ্রীমঙ্গল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির জানান, আইনি কার্যক্রম শেষ করে তাদের পরিবারের কাছে মৃতদেহ পৌঁছে দেওয়া হবে।
