শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়(১৮৯২–১৯৭০)। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাহিত্য সমালোচক, বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্য গবেষক। তিনি ১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই অক্টোবর বীরভূম জেলার কুশমোরে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মধুসূদন বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্য সমালোচক। ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে এন্ট্রান্স পাশ করে ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে হেতমপুর কলেজ থেকে এফ.এ. পরীক্ষায় চতুর্দশ স্থান অধিকার করেন ও স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে ঈশান স্কলার হয়ে বি.এ. এবং ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দে এম.এ. পরীক্ষাতেও ইংরেজিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে ‘রোমান্টিক থিওরি ওয়ার্ডসওয়ার্থ অ্যান্ড কোলরিজ’ থিসিসের ভিত্তিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনে ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপনা করেন রিপন কলেজ, প্রেসিডেন্সি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর কিছুকাল রাজশাহী কলেজে অধ্যাপনা করার পর পুনরায় কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ফিরে যান। এরপর সরকারি চাকুরি ত্যাগ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রামতনু লাহিড়ী অধ্যাপক নিযুক্ত হন ও ১৯৫৫ সাল অবধি ওই পদে বহাল থাকেন। স্বাধীন ভারতে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতিতেও অংশ নিয়েছিলেন ও পশ্চিমবঙ্গের ব্যবস্থাপক সভার সদস্য হয়েছিলেন। তিনি বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যের সমালোচনা এবং ইতিহাস রচনায় অসাধারণ পাণ্ডিত্যের পরিচয় দেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের মধ্যে ‘বঙ্গসাহিত্যে উপন্যাসের ধারা’ (১৯৩৮), ‘বাঙ্গালা সাহিত্যের কথা’ (১৯৪৬), ‘ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাস’ (১৯৪৬), ‘বাঙ্গালা সাহিত্যের বিকাশের ধারা’ (১৯৫৯), ‘সাহিত্য ও সংস্কৃতির তীর্থসঙ্গমে’ (১৯৬২), ‘রবীন্দ্র–সৃষ্টি–সমীক্ষা’ (১৯৬৯) উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া তিনি ‘সমালোচনা সাহিত্য’ (১৯৫২), ‘কবিকঙ্কণ চণ্ডী’, ‘উনবিংশ শতকের নীতিকবিতা সংকলন’ (১৯৬০) প্রভৃতি যুগ্মভাবে সম্পাদনা করেন। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের ২৮শে ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যবরণ করেন।