শ্রমিক স্বীকৃতি পেলেন গৃহপরিচারক ও নাবিক

শ্রম আইন সংশোধন অধ্যাদেশ অনুমোদন

| শুক্রবার , ২৪ অক্টোবর, ২০২৫ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

শ্রমিক অধিকার আরও সুরক্ষিত করার লক্ষ্য ধরে শ্রম আইন সংশোধন অধ্যাদেশে সায় দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ, সেখানে গৃহপরিচারক ও নাবিকদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অধ্যাদেশটি অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, অধ্যাদেশে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য তাদের কল্যাণে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আইএলওতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ চলমান আছে। সেখান থেকে কিছু সুপারিশ রয়েছে। উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর পরামর্শ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। সংশোধনী ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এখন থেকে অলাভজনক সংস্থার ক্ষেত্রে শ্রম আইন প্রযোজ্য হবে। গৃহপরিচারক, নাবিক এখন শ্রমিক হিসেবে আইনি সুরক্ষা পাবেন। খবর বিডিনিউজের।

কালো তালিকা করার প্রথার বিষয়টি তুলে ধরে আইন উপদেষ্টা শ্রমিকদের যাদের বিরুদ্ধে মালিকদের অভিযোগ থাকতো, তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হত এবং তারা অন্য কোথাও চাকরি পেত না। কালো তালিকাভুক্ত করাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। অন্য যেসব সংশোধনী আনা হয়েছে, সেগুলো হলট্রেড ইউনিয়ন গঠন এবং নিবন্ধন অনেক সহজ করা হয়েছে। একই কাজ ছেলেরা এবং মেয়েরা করলে মেয়েদেরকে কম বেতন দেওয়া হতো। সেই বৈষম্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির যে বিধান তা শক্তিশালী করা হয়েছে। কর্মস্থলে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে পুনর্বাসন তহবিল গঠনের কথা বলা হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, বিচার বিভাগের পৃথক সচিবালয় অধ্যাদেশ নীতিগত অনুমোদন করা হয়েছে। আরেকটু পর্যালোচনা শেষে এটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে। এ অধ্যাদেশ জারি হলে, অধস্ততন আদালতের বিচারক নিয়োগ, বদলি, পদায়ন, পদোন্নতি, তাদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সব ব্যাপার সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব বাজেট ব্যবস্থাপনা থাকবে।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উচ্চ আদালতের কিছু ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, সাম্প্রতিককালে উচ্চ আদালতের একটা বেঞ্চ একদিনে চার থেকে পাঁচ ঘন্টায় ৪০০ মামলায় জামিন দিয়েছেন। জামিন উনি দিতেই পারেন। কিন্তু চার পাঁচ ঘন্টায় ৪০০ মামলা কি শোনা সম্ভব? এটা আসলে বিচারিক বিবেচনা ছিল কি না, এরকম আরো কিছু কিছু প্রসঙ্গ উঠেছে।

বৈঠকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর অধ্যাদেশ নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরকে পৃথক জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা হবে। বর্তমানে যে জাদুঘর আছে এটার শাখা জাদুঘর হিসেবে নয়, পৃথক।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপলাতক আসামি প্রার্থী হতে পারবে না
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে পর্যটকের মৃত্যু, পুলিশ হেফাজতে ৪