বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনের সুচনা হয়েছিলো ১৯৫২ সালে, মাতৃ ভাষা বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবীতে আমাদের পূর্বসুরি সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিক সহ নাম না জানা আরো অনেকে। তাদের আত্মত্যাগে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে আমারা গড়ে তুলি তাদের স্মৃতির মিনার। ৫২ থেকে ৭১ ভাষার দাবীতে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নতুন একটি স্বদেশ পেতে লক্ষ লক্ষ তাজা প্রাণ ঝরে গেছে। আমরা প্রতিবছর মহান শহীদ দের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি, ৫২ পর গড়ে তুলি শহীদ মিনার ৭১ এর পর স্মৃতি সৌধ। আমরা বাঙালিরা প্রকৃতির নিয়ম মেনে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যস্ত আমাদের প্রাত্যহিক কাজসমূহ করি তবে কিছু কিছু পেশা তে ব্যাতিক্রম রয়েছে। ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন হতো প্রভাত ফেরি করে। ১৯৭৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন সামরিক জান্তা একপ্রকার চোরের মতো মধ্যরাতে শহীদ দের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকা কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে যান এবং সেই দিন ছবি টাঙ্গানো নিয়ে দুই টি রাজনৈতিক দলের সংঘর্ষে ১ জন নিহত হলে মধ্যরাতের শ্রদ্ধা নিবেদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ১৯৮৪ ঐ সামরিক জান্তার উত্তরসূরি আবার জনরোষ এড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে মধ্যরাতকেই বেছে নেন। তারপর থেকে ধীরে ধীরে তা রেওয়াজে পরিণত হয়ে যায়। হারিয়ে যায় আমাদের বাঙালি ঐত্যিহের প্রভাত ফেরীর সার্বজনীন রূপ। প্রকাশ্য দিনের আলোকে ভয় পাওয়া সামরিক জান্তাদের প্রণীত রেওয়াজ পরিহার করে আসুন আমরা ফিরে যাই আমাদের ঐত্যিহের প্রভাতফেরী তে বর্জন করি মধ্যরাতের শ্রদ্ধা নিবেদন। লেখক: সংগঠক