শ্যালকের নেতৃত্বে ভগ্নিপতিকে অপহরণ

১৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার

সাতকানিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৭ অক্টোবর, ২০২৩ at ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

সাতকানিয়ায় শ্যালকের নেতৃত্বে ভগ্নিপতিকে অপহরণ করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। খবর পেয়ে অপহরণের ১৪ ঘণ্টা পর ভুক্তভোগীকে উদ্ধার ও মো. হারুনুর রশিদ (৩৮) নামে এক অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার এমরান হোসেন (৫২) উপজেলার এওচিয়ার ইউনিয়নের মধ্য এওচিয়ার দানিশ চৌধুরী বাড়ির মৃত জামাল আহমদের পুত্র।

অপহৃত এমরান হোসেনের পুত্র মো. ইয়াছিন বলেন, আমার মাদকাসক্ত মামা মো. হোসেনের দেনা শোধ করার জন্য সম্প্রতি আমার নানা ৭৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি বাড়ি বিক্রি করে দেন। বাড়ি বিক্রির টাকা থেকে ৬৫ লাখ টাকা মামা হোসেনের দেনা শোধ করেন এবং ১০ লাখ টাকা বড় মামা ইউসুফের জন্য রেখে দেন। কিন্তু মামা হোসেন ওই ১০ লাখ টাকার জন্য নানাকে বারবার চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে মামা ওই টাকার জন্য আমার নানানানীকে মারধর করেন। এ ঘটনায় আমার বাবা নানানানীর পক্ষ নেয় এবং তাদেরকে চিকিৎসা করান। ফলে ক্ষিপ্ত হয়ে মামা হোসেন আমার বাবাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই অংশ হিসেবে গত রোববার সকালে আমার বাবাকে এওচিয়ার টেকস্থ এমরান স্টোরের সামনে থেকে মামা হোসেনের নেতৃত্বে অপহরণ করে সিএনজি ট্যাক্সিতে করে কাঞ্চনার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর অপহরণকারী মামা আমাকে ফোন করে বলেন, তোর বাবাকে আমি অপহরণ করে নিয়ে এসেছি। বর্তমানে আমার হেফাজতে আছে। দ্রুত ১০ লাখ টাকা নিয়ে কাঞ্চনা লতাপীরের বাজারস্থ আলমগীরের দোকানে রেখে আয়। টাকা না দিলে তোর বাবাকে জানে মেরে ফেলবো। এসব কথা বলতে বলতে মামার সহযোগীরা আমার বাবাকে মারধর শুরু করে। এ সময় মোবাইলে আমি আমার বাবার চিৎকার শুনতে পাই। অপহরণকারীদের আঘাতে বাবার চিৎকার শুনে টাকা দিতে রাজি হই এবং মারধর না করার জন্য অনুরোধ করি।

ইয়াছিন বলেন, কিছুক্ষণ পরে বাবার মোবাইল থেকে আমার মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপে বাবার রক্তাক্ত ছবি পাঠায় অপহরণকারীরা। পরে আমার বাবার মোবাইল থেকে কল করে মুক্তিপণের ১০ লাখ টাকা আলমগীরের দোকানের পরিবর্তে নানার বাড়িতে রেখে দরজায় তালা লাগিয়ে সবাইকে চলে যেতে বলে। মুক্তিপণের ওই টাকা পেলে বাবাকে ছেড়ে দিবে বলে জানায়।

এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে সাতকানিয়া থানার পুলিশ প্রযুুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে অপহরণকারীদের অবস্থান নিশ্চিত হন এবং পরে অভিযান চালিয়ে কাঞ্চনা লতাপীরের বাজারের পূর্বে বাবুলের মৎস্য খামার থেকে অপহৃত এমরান হোসেনকে উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ অপহরণকারী মো. হারুনুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে। তিনি কাঞ্চনার হাজারখীল হামজা বাপের বাড়ির মৃত আবদুল মান্নানের পুত্র এবং পেশায় সিএনজি ট্যাঙি চালক। পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে অন্যান্য অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।

সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত জানান, মূলত শ্যালক মো. হোসেনের নেতৃত্বে ভগ্নিপতি এমরান হোসেনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ঘটনার ১৪ ঘণ্টা পর রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপহৃত এমরানকে উদ্ধার করা হয়। এক অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় অপহৃতের ছেলে মো. ইয়াছিন বাদি হয়ে সাতকানিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে সোমবার (গতকাল) আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমবিদ্বেষী ছুরি হামলায় ৬ বছরের বালক নিহত
পরবর্তী নিবন্ধমিতু খুনের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকসহ আরো পাঁচজনের সাক্ষ্য