শ্যামল মিত্র : বাংলার সংগীতাকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র

| শুক্রবার , ১৫ নভেম্বর, ২০২৪ at ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ

শ্যামল মিত্র (১৯২৯১৯৮৭)। খ্যাতিমান সংগীত শিল্পী ও সুরকার। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের সবচেয়ে জনপ্রিয় গায়কদের অন্যতম। নজরুল গীতি, রবীন্দ্র সংগীত ও আধুনিক গানের পাশাপাশি বহু চলচ্চিত্রের গানে নেপথ্যে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। শিল্পী শ্যামল মিত্রের জন্ম ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ই জানুয়ারি নৈহাটিতে। তাদের আদি নিবাস ছিল হুগলি জেলার শিয়াখালার নিকটবর্তী পাতুল গ্রামে। পিতা ছিলেন নৈহাটির খ্যাতনামা চিকিৎসক সাধনকুমার মিত্র। ছোটবেলা থেকেই শ্যামল মিত্র খুব গান ভালবাসতেন। মাতা প্রতিভাময়ী এবং স্থানীয় গায়ক মৃণালকান্তি ঘোষের অনুপ্রেরণায় সঙ্গীতেই আকৃষ্ট হয়ে সংগীতে তালিম নিয়েছেন সুধীরলাল চক্রবর্তীর কাছে। শ্যামলের প্রাথমিক শিক্ষা স্থানীয় স্কুলে। হুগলি মহসিন কলেজ থেকে আই.এ এবং কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন। তাঁর সঙ্গীত শিক্ষার গুরু সুধীরলাল চক্রবর্তীর পরে শেখেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের কাছে। বাইশ বছর বয়সে আধুনিক গান নিয়ে শ্যামল মিত্রের গাওয়া প্রথম রেকর্ড বেরোয় কলকাতার এইচ.এম.ভি থেকে। এরপর কেবলই সামনে এগিয়ে চলা। নিজের সুর করা গান নিয়ে একের পর এক বেরোতে থাকে আধুনিক গানের রেকর্ড। কণ্ঠশিল্পীর পাশাপাশি সুরকার হিসেবেও জনপ্রিয় এবং প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠেন শ্যামল মিত্র। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, সতীনাথ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ প্রথিতযশা শিল্পী শ্যামল মিত্রের সুরে গান গেয়েছেন। রবীন্দ্র সংগীতে শিল্পী প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন দেবব্রত বিশ্বাসের কাছে। রবীন্দ্র সংগীতে শ্যামলের একাধিক রেকর্ড রয়েছে। গেয়েছেন নজরুলের গান। আধুনিক গানে ও চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে সুধীন দাশগুপ্ত, সলীল চৌধুরী, নচিকেতা ঘোষ, রবীন চট্টোপাধ্যায়, অভিজিত বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখের সুরে গান গেয়েছেন শ্যামল মিত্র। তাঁর গাওয়া অসংখ্য জনপ্রিয় গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য : ‘আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা’, ‘তুমি আর আমি শুধু জীবনের খেলাঘর’, ‘যা যারে যা যা পাখি’, ‘হংস পাখা দিয়ে’ প্রভৃতি। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া ‘হয়তো কিছুই নাহি পাব’, ‘ও ঝরা পাতা’; সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের ‘রাতের আকাশ তারায় রয়েছে’ প্রভৃতি জনপ্রিয় গানের সুর করেছেন শ্যামল মিত্র। বর্তমান যুগেও হারানো দিনের সেসব গানের আবেদন অমলিন। ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ ই নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধচবির কেন্দ্রীয় মসজিদের সংস্কার চাই