শোচনীয় ব্যাটিং ব্যর্থতা, স্বপ্ন ভঙ্গ বাংলাদেশের

এশিয়া কাপে প্রথমবার ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ

এ যেন হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলার মত অবস্থা। এশিয়া কাপের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছিলেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে যাচ্ছে তারা। সে স্বপ্নের কাছাকাছি চলেও গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেমিফাইনালে পরিণত হওয়া সুপার ফোর পর্বের পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিতে বাগে পেয়েও হারাতে পারল না পাকিস্তানকে। বোলাররা দুর্দান্ত বোলিং করার পরও ব্যাটারদের অমার্জনীয় ব্যর্থতায় স্বপ্ন ভঙ্গ হলো বাংলাদেশের। বোলারদের তৈরি করে দেওয়া মঞ্চে পরের দৃশ্যের অভিনয়টা করতে পারল না বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ফলে পাকিস্তানের কাছে ১১ রানে হেরে বিদায় নিতে হল বাংলাদেশকে। এর মাধ্যমে এশিয়া কাপের ১৭ আসরে প্রথমবার ফাইনালে লড়বে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতপাকিস্তান।

ম্যাচে শুরুতে দারুন বোলিং করেছে বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু ব্যাটাররা যেন ম্যাচটা ফেলে দিয়ে আসল। আগের ম্যাচেও ভারতের বিপক্ষে বোলারদের কৃতিত্বকে ম্লান করে দিয়েছিল ব্যাটাররা। একই নাটকের পুনঃমঞ্চায়ন হল গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে। ফলে স্বপ্ন পূরণের কাছে গিয়েও হতাশা নিয়ে এশিয়া কাপ শেষ করতে হলো বাংলাদেশকে।

টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় বাংলাদেশের অধিনায়ক। তার সিদ্ধান্ত শুরু থেকেই সঠিক প্রমাণ করতে থাকে বাংলাদেশের বোলাররা। প্রথম ওভারেই তাসকিনের আঘাত। তার শিকার ফারহান। পরের ওভারে মেহেদী হাসানের আঘাত। তার শিকার সাইম আইয়ুব। টুর্নামেন্টে তৃতীয়বারের মত শুন্য রানে ফিরলেন সাইম। তৃতীয় উইকেটে ফখর জামান এবং সালমান আগা প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও তাদের সফল হতে দেননি রিশাদ হোসেন। ১৩ রান করা ফখর জামানকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন রিশাদ। নিজের পরের ওভারে হুসাইন তালাতকে ফেরান রিশাদ। এরপর মোস্তাফিজের ধাক্কায় ফিরলেন অধিনায়ক সালমান আগা। ২৩ বলে ১৯ রান করেন আগা। ১০ ওভার শেষে পাকিস্তানের রান ছিল ৪ উইকেটে ৪৬। ষষ্ঠ উইকেটে শাহীন আফ্রিদিকে নিয়ে ঝড় তোলার চেষ্টা করেন মোহাম্মদ হারিস। দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে এসে এ জুটি ভাঙেন তাসকিন। এবার তার শিকার ১৩ বলে ১৯ রান করা শাহীন আফ্রিদি। দলের চরম সে বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে মোহাম্মদ নেওয়াজকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন মোহাম্মদ হারিস। দুজনের ৩৭ রানের জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান। ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ২৩ বলে ৩১ রান করা হারিসকে ফেরান মেহেদী। ক্রমশ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠা নেওয়াজকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় শিকার তুলে নেন তাসকিন। ১৫ বলে ২৫ রান করে ফিরেন নেওয়াজ। শেষ পর্যন্ত ফাহিম আশরাফের ৯ বলে ১৪ রানের সুবাধে ১৩৫ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। বাংলাদেশের তাসিকন ২৮ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ২টি করে নিয়েছেন মেহেদী হাসান এবং রিশাদ হোসেন।

জবাবে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ প্রথম ওভারেই হারায় ইমনকে হারায়। তাওহিদ হৃদয় ব্যর্থ হলেন আরো একবার। শাহীন আফ্রিদির দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরেন হৃদয়। মেহেদী হাসানকে নিয়ে মাত্র ৬ রান যোগ করতে পারেন দলের সবচাইতে সফল ব্যাটার সাইফ হাসান। হারিস রউফের বলে সাইম আইয়ুবকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন সাইফ ১৮ রান করে। মেহেদী হাসান, নুরুল হাসানরা ফিরেছেন অবিবেচকের মত শট খেলে। অধিনায়ক জাকের আলীর যেন কোন তাড়া ছিল। নাহয় দলের এমন কঠিন মুহূর্তে এ ধরনের শট খেলবেন কেন। মেহেদী ১১, নুরুল হাসান ১৬ রান করলেও জাকের আলী করেন ৫ রান। দলের শেষ ভরসা হয়ে থাকা শামীম হোসেন ফিরলেন আশাহত করে। শাহীন আফ্রিদির তৃতীয় শিকার হয়ে ফেরার আগে ২৫ বলে ৩০ রান করে আসেন শামীম। পরের ওভারে হারিস রউফের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন তানজিম সাকিব। এক বল পর ফিরেন তাসকিনও। শেষ পর্যন্ত ১২৪ রানে থামে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন শাহীন আফ্রিদি এবং হারিস রউফ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজুলাই আন্দোলনে চট্টগ্রামে হতাহতের ঘটনার মামলায় প্রথম চার্জশিট
পরবর্তী নিবন্ধসাগরে ফের লঘুচাপ