শোকের মাঝে সান্ত্বনার খবর

চকরিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

শোকের মাঝেও খুশির খবর দিয়েছেন কক্সবাজারের চকরিয়ায় পিকআপ চাপা থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া প্লাবন শীল। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় একসঙ্গে নিহত পাঁচভাইয়ের সর্বকনিষ্ঠ সহোদর তিনি। গত রোববার সারা দেশে একযোগে প্রকাশিত এইচএসসির ফলাফলে জিপিএ ৩.৫৮ পয়েন্ট পেয়ে পাস করেছেন প্লাবন। শোকের মাঝেও তার এই কৃতিত্বের খবর পরিবার সদস্যদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে।
সদ্য এইচএসসি পাস করা প্লাবন ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে গেলেও একেরপর এক ভাইয়ের মৃত্যুতে পরিবারের অন্য সদস্যদের মতো সেও নির্বাক বনে যান। এমনকি একপর্যায়ে তিনি ব্রেন স্ট্রোকেও আক্রান্ত হন। অবশ্য দফায় দফায় হাসপাতালে ভর্তির পর বর্তমানে কিছুটা সুস্থবোধ করছেন তিনি।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যার আগে মালুমঘাটের প্রয়াত সুরেশ চন্দ্র শীলের বাড়িতে গেলে এই খবর মেলে। এ সময় প্লাবনকে ঘিরে পরিবার সদস্য, স্বজন এবং প্রতিবেশীরা প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন।
এ সময় কথা হয় প্লাবনের সাথে। তাঁর কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়, পরীক্ষার ফলাফল দিয়েছে, পাস করেছেন কী-না? তখন ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে প্লাবন বলেন, আমি পাস করেছি। ডুলাহাজারা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ নিয়ে আমি পড়েছি। এর পর প্লাবন বলতে থাকেন, আমার ভাই স্মরণ কোথায়? সে কখন আসবে। আমার জন্য মিষ্টি নিয়ে আসবে না?
প্লাবন শীলের মা মৃণালিনী শীল বলেন, অর্থ উপার্জনের সব ক্ষেত্র আমার শেষ হয়ে গেছে। এখন যদি আমার এই ছেলে প্লাবন ছোট একটা চাকরি পায় তাহলে অন্তত পরিবারের সকল সদস্যদের মুখে দুবেলা অন্ন যোগাড় করতে পারবে। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ছেলের জন্য একটি চাকরি চাই।
তিনি আরো বলেন, একসঙ্গে নিহত হওয়া পাঁচ ছেলের স্ত্রীরাও পড়ালেখা জানা। তারাও চাকরি করতে পারবে। যদি তাদেরও চাকরির ব্যবস্থা করা হয় তাহলে নাতিদের নিয়ে পরবর্তী জীবন ভালভাবে কাটাতে পারবে।
উল্লেখ্য, প্লাবনের বাবা সুরেশ চন্দ্র শীল প্রয়াত হওয়ার দশদিনের মাথায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি বাড়ির কাছে মহাসড়কের পাশে নির্জন স্থানে পারলৌকিক ক্রিয়ানুষ্ঠানের আচার হিসেবে ‘দণ্ডি’ দিয়ে বাড়ি ফেরার মুহূর্তে সামনের সারিতে থাকা একসঙ্গে সাত ভাই-বোনকে চাপা দেয় ঘাতক পিকআপ। এ সময় প্লাবন এবং বোন মুন্নী শর্মা পেছনের সারিতে থাকায় প্রাণে বেঁচে গেলেও ঘটনাস্থলে চার ভাই যথাক্রমে অনুপম, নিরূপম, দীপক, চম্পক ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্মরণ শীল মারা যান। বর্তমানে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে আছেন আরেক ভাই রক্তিম শীল এবং মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিস্টান হাসপাতালে বড় বোন হীরা শীল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপির বিরুদ্ধে বড় অঙ্কের অর্থপাচারের অভিযোগ জয়ের
পরবর্তী নিবন্ধলায়ন্স চক্ষু হাসপাতাল পরিদর্শনে বর্তমান ও প্রাক্তন গভর্নরবৃন্দ