শেষ হলো চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন। গতকাল সকাল ৮ টা থেকে বেলা সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২৪০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। এবারের নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ ছিল ক্রীড়াঙ্গনে। তবে আগের তিনবারের মত এবারেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন আ.জ.ম. নাছির উদ্দিন। বাকি পদ গুলোর জন্য ৪৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। যেখান থেকে নির্বাচনের আগের দিন আদালতের রায়ে নির্বাচন করার অধিকার হারায় দুজন। শেষ পর্যন্ত গতকাল সুষ্ঠুভাবেই নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। যেখানে সহ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান। তিনি পেয়েছেন ২২১ ভোট। সৈয়দ আবুল বশর পেয়েছেন ১৫৪ ভোট। এহেছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল ১২৮ ভোট এবং এডভোকেট শাহীন আফতাবুর রেজা চৌধুরী ১২৩ ভোট। এই পদে প্রার্থী ছিল ৯ জন। বাকিদের মধ্যে আলহাজ্ব আবুল হাশেম (বীর মুক্তিযোদ্ধা) ৮৭, তাহের উল আলম চৌধুরী ৫৪, মকসুদুর রহমান বুলবুল ৩৭, মফিজুর রহমান ৬৯ এবং শাহজাদা আলম পেয়েছেন ৭৯ ভোট। অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াইটা হয়েছে একেবারে হাড্ডাহাড্ডি। এই পদে বর্তমান অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাহাবুদ্দিন শামীম মাত্র ১ ভোটে বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরীকে পরাজিত করেন। প্রথম গননায় দুজনের ভোট সমান হলে পুনরায় গণনা করা হয়। আর তাতেই ১ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন সৈয়দ সাহাবুদ্দিন শামীম। তিনি পেয়েছেন ৮৭ ভোট আর মশিউর রহমান চৌধুরী পেয়েছেন ৮৬ ভোট। এই পদে প্রার্থী ছিল তিনজন। অপরজন এস এম শহীদুল ইসলাম পেয়েছেন ৬৩ ভোট। যুগ্ম সম্পাদকের দুটি পদের জন্য লড়াই করেছিলেন তিনজন। আর সে পদে নির্বাচিত হয়েছেন আমিনুল ইসলাম ২১৫ ভোট আর অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন ১৭৩ ভোট। এই পদের অপর প্রার্থী সরোয়ার আলম চৌধুরী মনি পেয়েছেন ৮৬ ভোট। কোষাধ্যক্ষ পদে পঞ্চমবারের মত নির্বাচিত হয়েছেন শাহাবুদ্দিন মোঃ জাহাঙ্গীর। তিনি পেয়েছেন ১১০ ভোট। এই পদে প্রার্থী ছিলেন দুইজন। অপর প্রার্থী আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল পেয়েছেন ৬৭ ভোট। এই পদে বাতিল হয়েছে ৬৩ ভোট। নির্বাহী সদস্যের ১৩ পদের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন ২৭ জন। সেখানে নির্বাচিত হয়েছেন যথাক্রমে গোলাম মহিউদ্দিন হাসান ১৯৬ ভোট, মোহাম্মদ শাহজাহান ১৭৮ ভোট, আবদুল হান্নান আকবর ১৭০ ভোট, দিদারুল আলম ১৬৮ ভোট, জসিম উদ্দিন ১৫৩ ভোট, হাসান মুরাদ বিপ্লব ১৪৮ ভোট, আকতারুজ্জামান ১৪৫ ভোট, রাশেদুর রহমান মিলন ১৩৪ ভোট, নাসির মিয়া ১৩২ ভোট, সৈয়দ মোহাম্মদ তানসীর ১২৮ ভোট, মুজিবুর রহমান ১২৩ ভোট, এনামুল হক ১২২ ভোট, আলমগীর পারভেজ ১১৩ ভোট। এছাড়া বাকিদের মধ্যে অনুপ বিশ্বাস ৪৪, এ এস এম ইকবাল মোরশেদ ৬৫, এ এস এম সাইফুদ্দিন চৌধুরী ৮৩, কল্লোল দাশ ৯৫, জহির আহমেদ চৌধুরী ৪৯, দিদারুল আলম মাসুম ১০৮, ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু ১০৭, প্রবীণ কুমার ঘোষ ৬৩, রায়হান উদ্দিন রুবেল ৮৩, শওকত হোসাইন ১০৫, সাইফুল আলম খান ৮০, সাহেলা আবেদীন রীমা ৮৬, সুমন দে ৯৮, হারুন আল রশিদ ৬৬। উপজেলা সংরক্ষিত সদস্য পদে প্রার্থী ছিলেন তিনজন। এদের মধ্যে নির্বাচিত হয়েছেন দুজন। জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর পেয়েছেন ১৭৯ ভোট। প্রদীপ কুমার ভট্টচার্য পেয়েছেন ১৪৯ ভোট। এছাড়া অপরজন জাফর ইকবাল পেয়েছেন ১২৬ ভোট। মোট ২৫২ জন ভোটারের মধ্যে ২৪০ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। সকাল থেকেই জেলা ক্রীড়া সংস্থার এই ভোটকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজ ছিল এম এ আজিজ স্টেডিয়াম এলাকায়। সাবেক ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়া সংগঠক, সমাজের মান্যগন্য ব্যক্তিবর্গ সবাই আসেন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে। দীর্ঘ দিন পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় এই নির্বাচনকে ঘিরে গত বেশ কিছুদিন ধরে উৎসবের আমেজ চলছিল। গতকাল নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সেই উৎসবের।
এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মত প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সৈয়দ মোহাম্মদ তানসীর, রাশেদুর রহমান মিলন, মুজিবুর রহমান, আকতারুজ্জামান। তবে সদস্য পদে সর্বোচ্চ ১৮৬ ভোট পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন গোলাম মহিউদ্দিন হাসান। তিনি ২০১১ সালের নির্বাচনে স্রোতের বিপরীতে গিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলেন। এরপর থেকে তিনি টানা চতুর্থবারের মত জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হলেন। নির্বাচনের উত্তেজনা শেষ। এবার চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে কাজ করার পালা। তবে কতটা সফল হবেন নির্বাচিতরা সেটা সময়ই বলে দেবে।