শেষ ম্যাচে দারুণ জয় বাংলাদেশের মেয়েদের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ১৪ জুলাই, ২০২৩ at ৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ

খানিকটা আফসোস থাকতেই পারে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের। কারন দ্বিতীয় টিটোয়েন্টিটা যদি হাতের মুঠো থেকে ফসকে না যেতো তাহলে সিরিজ জয়ী দলই থাকতো বাংলাদেশ। অথচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আরো সহজ লক্ষ্য পেয়েছিল বাংলাদেশ নারী দল। শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে সে ম্যাচটি একেবারে যেন ছুড়ে ফেলে দিয়ে আসল বাংলার নারীরা। তাই আফসোসটা একটু বড় হওয়াটাই স্বাভাবিক। সে ম্যাচে ৯৫ রানে প্রতিপক্ষকে আঠকে দিয়েও হারতে হয়েছিল ৮ রানে। আর গতকাল ১০২ রানে ভারতকে থামিয়ে দিয়ে আগের ম্যাচের ভুলটা আর করেনি নারী ক্রিকেটাররা। রাবেয়া খান আর সুলতানা খাতুনের দুর্দান্ত বোলিং এর পর নিগার সুলতানা জ্যোতির দায়িত্বশীল ব্যাটিং বাংলাদেশকে পাইয়ে দেয় ৪ উইকেটের দারুন জয়। যদিও এই জয়ের পরও সিরিজ হারাতে হয়েছে টাইগার নারীদের। তবে হোয়াইট ওয়াশ এড়ানোর পাশাপাশি প্রায় ৫ বছর পর ভারতের বিপক্ষে জয় পেল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। প্রথম দুই ম্যাচ জেতায় ভারত সিরিজ জিতেছে ২১ ব্যবধানে। সিরিজের প্রথম টিটোয়েন্টিতে ভারতের কাছে ৭ উইকেটে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের পথে ছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৮ রানে হারতে হয়েছিল নিগার সুলতানার দলকে সে ম্যাচেও। তবে গতকাল অবশ্য আর ভুল করেনি বাংলাদেশ। সিরিজ হারানোর পর শেষ ম্যাচে এসে ভারতকে হেসেখেলেই হারিয়েছে।

শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ভারতীয় নারী দল। বাংলাদেশের বোলাররা শুরু থেকেই একরকম চেপে ধরে ভারতের ব্যাটারদের। দুই ওপেনার স্মৃতি মান্দানা এবং শেফালী ভার্মাকে যখন ফেরান সুলতানা খাতুন তখন ভারতের সংগ্রহ ২০ রান। এরপর জেমিমা রদ্রিগেজ এবং অধিনায়ত হারমানপ্রিত কাউর গড়েন ৪৫ রানের জুটি। এজুটি ভাঙেন স্বর্না আকতার । তিনি ফেরান ২৬ বলে ২৮ রান করা জেমিমা রদ্রিগেজকে। দলকে ৯১ রানে পৌছে দিয়ে ফিরেন অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউর। ফাহিমা খাতুনের শিকার হয়ে ফেরার আগে ৪১ বলে ৪০ রান করেন ভারতের অধিনায়ক। এর পরের ২২ বলে ১১ রান করে ভারত ৫ উইকেট হারিয়ে। বলা যায় বাংলাদেশি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৯ উইকেটে ১০২ রানের বেশি করতে পারেনি সফরকারীরা। বাংলাদেশের লেগস্পিনার রাবেয়া খান ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩টি উইকেট। সুলতানা খাতুন ১৭ রানে শিকার করেন দুটি। ১০৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ১৬ রানে ফিরেন সাথী রানী এবং দিলারা আকতার। এরপর ওপেনার শামীমা সুলতানা এবং অধিনায়ক নিগার সুলতানা মিলে যোগ করেন ৪৬ রান। ৬২ রানের মাথায় এজুটি ভাঙতেই আগের ম্যাচের মত হুড়মুড় করে ভাঙতে থাকে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন। দলকে ৮৫ রানে পৌছে দিয়ে ফিরেন ৪৬ বলে ৪২ রান করা শামীমা সুলতানা। এরপর হঠাৎ করেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রন যেন চলে যায় ভারতের হাতে। আগের ম্যাচের দৃশ্যটা যেন উকি দিচ্ছিল এই ম্যাচেও। তবে শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু হতে দেননি রিতু মনি এবং নাহিদা আকতার। শেষ পর্যন্ত ১০ বল হাতে রেখে জয়ের উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ । নাহিদা আক্তার ৬ বলে ১০ রান করে অপরাজিত থাকেন। তার সঙ্গে ৮ বলে ৭ রানে ছিলেন রিতু মনি। অধিনায়ক নিগার সুলতানা ২০ বলে ১৪, ওপেনার সাথী রানী ১০ বলে ১০ আর শেষদিকে সুলতানা খাতুন ৮ বলে ১২ করে আউট হন। ভারতের পক্ষে মিন্নু মানি এবং দেবিকা বৈদ্য নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। ম্যাচ সেরা হয়েছেন শামীমা সুলতানা আর সিরিজ সেরা হয়েছেন হারমানপ্রিত কাউর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রীতি ম্যাচে নেপালের সাথে ড্র করল নারী ফুটবল দল
পরবর্তী নিবন্ধআবারো বিশ্বকাপে বড় কিছু করার স্বপ্ন সাকিবের