নিজেদের প্রথম ম্যাচে রীতিমত বিধ্বস্ত হয়েছিল ইরান। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৬-২ গোলে উড়ে গিয়েছিল তারা। এরপর মনে হয়েছিল কাতার বিশ্বকাপে বাকী খেলাগুলোয় তাদের নিয়ে ছেলেখেলা হবে।
কিন্তু না, সেখান থেকে ফিরে এসেছে তারা। দুঃস্বপ্নের দিনটি ভুলে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী ওয়েলসকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। গতকাল শেষ মুহূর্তের থ্র্রিলারে ২-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে এশিয়ার দলটি। যোগ করা সময়ে জয়সূচক গোল দুটো আসে রুজবে চেশমি ও রামিন রেজাইয়ানের পা থেকে।
ম্যাচের শুরুর সঙ্গে শেষের কোনো মিলই নেই বলা যায়। প্রথমার্ধে দুই দলই সমানতালে খেলতে থাকে। কেউই ডি বঙের সামনে সেভাবে আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনি। তবে বিরতির পর গ্যারেথ বেলের ওয়েলসের ওপর চড়াও হতে থাকে ইরান। একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে তারা। ভাগ্য সহায় থাকলে হয়তো গোলও পেয়ে যেতো। পোস্টের বাধায় দুই সেকেন্ডের ভেতর দুইবার হতাশ হয়ে ফিরতে হয় ইরানীদের। ৫২ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে প্রথমে আজমুন ও ফিরতি শটে গলিজাদেও পোস্টে লাগান বল। তবুও হাল ছাড়েনি ইরান। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষিপ্র থেকে ক্ষিপ্রতর হয়ে উঠতে থাকে তারা। অন্যদিকে বেশিরভাগ সময় বল পজেশনে রাখলেও ডি বঙের সামনে মুখ থুবড়ে পড়েছিল ওয়েলসের আক্রমণ। কিন্তু কোনো পক্ষই গোলের দেখা পাচ্ছিল না। ৮৫ মিনিটে মুরেকে লাথি মেরে লাল কার্ড দেখেন ওয়েলস গোলরক্ষক ওয়েইন হেনাসে। বিশ্বকাপ ইতিহাসে তৃতীয় গোলরক্ষক হিসেবে লাল কার্ডের কালিমা গায়ে লাগান তিনি। ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া ওয়েলস এরপর রীতিমত খাবি খাচ্ছিল। সেই সুযোগটা বেশ ভালোভাবেই নিয়ে নেয় ইরান।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর যোগ করা সময়ে এসে ভাগ্যের চাকা খুলে যায় তাদের। যেখানে একটি গোল পেতেও কষ্ট হচ্ছিল সেখানে দুই মিনিটের ভেতর দুই গোল পেয়ে যায় তারা। যোগ করা সময়ের আট মিনিটে গোলের ডেডলক ভাঙেন চেশমি। বঙের বাইরে থেকে নিচু কোণাকুণি শটে ওয়েলস গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন এই ডিফেন্ডার। দুই মিনিট পর পাল্টা আক্রমণ থেকে পাওয়া বলটি দুর্দান্ত চিপে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন রেজাইয়ান। তাতে ইরানও মেতে উঠে জয়ের উল্লাসে। দুই ম্যাচে এক জয় ও এক হার নিয়ে গ্রুপ ‘বি’ এর পয়েন্ট টেবিলে দুইয়ে আছে তারা। অন্যদিকে হারের পর শেষ ষোলোয় উঠার সম্ভাবনা অনেক কমে গেল ওয়েলসের। প্রথম ম্যাচে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ড্র করেছিল। সেখান থেকে পয়েন্ট পেয়েছে ১টি।