সিলেট টেস্টের প্রথম দিনে টস জিতে ব্যাট করতে নামে আয়ারল্যান্ড। আর দিনের প্রথম ওভারেই উইকেট নিয়ে দারুণ শুরুর আভাস দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এমন শুরুর পর প্রধম সেশনে আর কোনো উইকেট তুলতে পারেনি টাইগাররা। পল স্টার্লিং ও ক্যাড কারমাইকেলের জোড়া ফিফটিতে বড় রানের ভিত পায় আইরিশরা। শেষ বিকেলে দারুণ বোলিং করেছেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। হাসান মুরাদ–মেহেদি মিরাজের দুর্দান্ত বোলিংয়ে স্বস্তি নিয়ে দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। সিলেট টেস্টে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৭০ রান করেছে আয়ারল্যান্ড। ৫৬ বলে ২১ রান করে অপরাজিত আছেন বেন মেকার্থি। বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছেন মেহেদি মিরাজ।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বল হাতে বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন পেসার হাসান মাহমুদ। ইনিংসের চতুর্থ বলে আয়ারল্যান্ড ওপেনার ও অধিনায়ক এন্ডি বলবির্নিকে শূন্য হাতে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন হাসান। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার পল স্টার্লিং ও অভিষিক্ত কেড কারমাইকেল। বাংলাদেশ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে ১৫৫ বলে ৯৬ রানের জুটি গড়েন তারা। এরমধ্যে ২২তম ওভারে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান স্টার্লিং। স্টার্লিংয়ের হাফ–সেঞ্চুরিতে প্রথম সেশন নিজেদের করে নেয় আয়ারল্যান্ড। ১ উইকেটে ৯৪ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় তারা। বিরতির পর বাংলাদেশকে ব্রেক–থ্রু এনে দেন পেসার নাহিদ রানা। নিজের দ্বিতীয় স্পেলের তৃতীয় ডেলিভারিতে স্টার্লিংকে শিকার করেন তিনি। সাদমান ইসলামকে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৬০ রান করেন একবার জীবন পাওয়া স্টার্লিং। স্টার্লিংয়ের বিদায়ে ক্রিজে আসেন নতুন ব্যাটার হ্যারি টেক্টর। তাকে ১ রানেই বিদায় করেন বাংলাদেশ স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ১ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আয়ারল্যান্ড। দলকে চাপমুক্ত করতে চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়েন কারমাইকেল ও কার্টিস ক্যাম্ফার। তাদের ৯৩ বলে ৫৩ রানের জুটিতে দেড়শ রানে পৌঁছায় আয়ারল্যান্ড। টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতকের দেখা পান কারমাইকেল। স্টার্লিংয়ের মত হাফ–সেঞ্চুরির পর আউট হন কারমাইকেল। বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে স্পিনার মিরাজের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ৫৯ রান করেন কারমাইকেল।
দলীয় ১৫০ রানে কারমাইকেল ফেরার পর টানা দ্বিতীয় হাফ–সেঞ্চুরির জুটি পায় আয়ারল্যান্ড। পঞ্চম উইকেটে ক্যাম্ফার ও উইকেটরক্ষক লরকান টাকারের ১২১ বলে ৫৩ রানের জুটিতে চা–বিরতির পর ২শতে পৌঁছে যায় আয়ারল্যান্ড। কিছুক্ষণ পর ক্যাম্ফার ও টাকারকে বিচ্ছিন্ন করেন বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা বাঁ–হাতি স্পিনার হাসান মুরাদ। স্লিপে শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ৯৪ বলে ৪৪ রান করে থামেন ক্যাম্ফার। অভিষেক টেস্ট উইকেটের পর দ্বিতীয় শিকারের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি মুরাদকে। আরেক সেট ব্যাটার টাকারকেও বিদায় দেন তিনি। উইকেটরক্ষক লিটন দাসের স্টাম্পিংয়ে সাজঘরের পথ ধরেন ৮০ বলে ৪১ রান করা টাকার।
দুই সেট ব্যাটারকে হারিয়ে আয়ারল্যান্ড যখন চাপে, ঐ অবস্থায় নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন মিরাজ। অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনকে ৫ রানে স্টাম্প আউট করেন মিরাজ। ১৯ রানের ব্যবধানে তিন ব্যাটারের বিদায়ে ২২২ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়ে প্রথম দিনই গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়েছিল আয়ারল্যান্ড। কিন্তু সেটি হতে দেননি অভিষিক্ত জর্ডান নিল ও ব্যারি ম্যাককার্থি। দেখে–শুনে খেলে অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যান তারা। কিন্তু দিনের শেষ বলে উইকেট তুলে নেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। নিলকে লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন তিনি। ৬০ বলে ৩০ রান করেন নিল। অষ্টম উইকেটে ম্যাককার্থির সাথে ১০৩ বলে ৪৮ রান যোগ করেন তিনি। ২টি বাউন্ডারিতে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন ম্যাককার্থি।
২৩ ওভারে ৫০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফল বোলার মিরাজ। অভিষেক টেস্টের প্রথম দিন ২০ ওভার হাত ঘুড়িয়ে ৪৭ রানে ২ উইকেট নেন হাসান মুরাদ। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ–নাহিদ রানা ও তাইজুল ইসলাম।
