গত এক দিনে ফের শতাধিক মানুষের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে মোট ১১ হাজার ৫৩ জনের।
সংক্রমণের বিস্তার রোধে কঠোর লকডাউনের মধ্যেই গত ১৫ এপ্রিল দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা ১০ হাজারের বিষাদময় মাইলফলক পেরিয়েছিল। তার সঙ্গে আরও এক হাজার নাম যুক্ত হতে সময় লাগল মাত্র দশ দিন। গত এক দিনে আরও ২ হাজার ৯২২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৭ লাখ ৪৫ হাজার ৩২২ জন হল। সরকারি হিসাবে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৪ হাজার ৩০১ জন গত এক দিনে সেরে উঠেছেন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫২ জন। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা সাত লাখ পেরিয়ে যায় গত ১৪ এপ্রিল। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১৫ এপ্রিল তা দশ হাজার ছাড়িয়ে যায়। দশ দিনের মাথায় তা ১১ হাজার ছাড়াল।
এর মধ্যে ১৯ এপ্রিল রেকর্ড ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১৬ থেকে ১৯ এপ্রিল চার দিন দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ছিল একশর বেশি। এরপর তা কিছুটা কমে নব্বইয়ের নিচে নেমে এলেও পাঁচ দিন পর ফের একশ ছাড়াল দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রথম মৃত্যুর আড়াই মাস পর গত বছরের ১০ জুন মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছিল। এরপর ৫ জুলাই ২ হাজার, ২৮ জুলাই ৩ হাজার, ২৫ আগস্ট ৪ হাজার, ২২ সেপ্টেম্বর ৫ হাজার ছাড়ায় মৃতের সংখ্যা। এরপর কমে আসে মৃত্যু বাড়ার গতি। ৪ নভেম্বর ৬ হাজার, ১২ ডিসেম্বর ৭ হাজারের ঘর ছাড়ায় মৃত্যুর সংখ্যা। এ বছরের ২৩ জানুয়ারি ৮ হাজার এবং ৩১ মার্চ মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়ায়।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর ১৫ দিনেই এক হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু ঘটে, গত ১৫ এপ্রিল মৃতের মোট সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর পরের এক হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটাতে আরও কম, মাত্র দশ দিন সময় নিল করোনাভাইরাস। এ ভাইরাসে এর আগে এত দ্রুত এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়নি দেশে।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ১৪ কোটি ৬৫ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩১ লাখ এক হাজারের বেশি মানুষের।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩ তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৩৫০টি ল্যাবে ২১ হাজার ৯২২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৫৩ লাখ ৪৫ হাজার ৮টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ২১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৯ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫৪টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪৭টি।