ছোট দলের বড় তারকা লুকা মদ্রিচ। ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলার হিসেবে যতটানা পরিচিত মদ্রিচ তার চাইতে তাকে ফুটবল বিশ্ব বেশি চিনে রিয়াল মাদ্রিদের মদ্রিচ হিসেবে। তবে বারবার এই ক্রোয়েশিয়া ধমকা হাওয়া বইয়ে দিয়ে গেছে বিশ্বকাপে। গত আসরে ফাইনালে খেরবে ক্রোয়েশিয়া সেটা কয়জনইবা বিশ্বাস করতে পেরেছিল। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ক্রোয়েশিয়া খেলেছে ফাইনালে। যদিও ফ্রান্সের কাছে হেরে তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়। আর ইউরোপের এই দলটিকে ফাইনালে তোলার অন্যতম নায়ক ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা লুকা মদ্রিচ। আর্জেন্টিনার মেসি, পর্তুগালের রোনালদো আর ব্রাজিলের নেইমাররা হয়তো কাতারেই খেলে ফেলবেন তাদের শেষ বিশ্বকাপ। ওই তালিকায় আছেন ক্রোয়েশিয়ার লুকা মদ্রিচও। তিনি নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন বয়স হয়েছে। হয়তো শেষ বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছি। তিনি নিজের বয়সের কথা ভক্ত সমর্থকদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, আমার বয়স সম্পর্কে আমি সচেতন। হয়তো এটাই হবে আমার ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। গত সেপ্টেম্বরে ৩৭ বছরে পা দিয়েছেন লুকা। দেশের জার্সিতে এরই মধ্যে তিনি খেলে ফেলেছেন ১৫৫টি ম্যাচ। গোল করেছেন ২৩টি। গত আসরের ধারাবাহিকতায় এবার দলটি ফাইনাল খেলতে পারলে নিজের ক্যারিয়ারে যোগ হবে আরো কিছু ম্যাচ । হয়তো গোলও জমা হবে। রিয়াল মাদ্রিদের এই মিডফিল্ডার নিজের শেষ বিশ্বকাপটাকে নিশ্চয়ই স্মরণীয় করে রাখতে চাইবেন। পারবেন কি ভক্তদের প্রত্যাশা মিটিয়ে আরেকটি দারুণ বিশ্বকাপ শেষ করতে ?
বর্তমান রানার্সআপ হিসেবে কাতার বিশ্বকাপে ফেবারিটদের তালিকায় অন্যতম দল হতে পারে ক্রোয়েশিয়া। বিশেষ করে লুকার মতো একজন সৃষ্টিশীল ফুটবলার যে দলে আছেন, সেই দলের সমর্থকরা ভালো কিছু আশা করতেই পারেন। বয়স ৪০ এর কাছাকাছি হলেও খেলায় তার কোন প্রভাব নেই। লুকা মদ্রিচ এখনো ২৭ বছরের যুবকের মতো মাঠে বিচরণ করেন। প্রতিপক্ষে ডিফেন্স ভেঙ্গে গোলের যোগানদাতা হিসেবে মদ্রিচের কোন জুড়ি নেই। লুকা মদ্রিচ কেবল নিজেই সেরা পারফরমার নন। তিনি দলে থাকা তরুণদের জন্যও অনুপ্রেরণা। দলের নতুন খেলোয়াড়দের কাছে রোলমডেল হিসেবেই তিনি কাজ করছেন। তাকে নিয়ে তাই দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ই বাড়তি কিছু আশা করে থাকেন। ক্রোয়েটদের ভক্তকূলরাও তাকিয়ে থাকবে তার দিকে। ক্রোয়েশিয়া প্রফেশনাল ফুটবল ক্লাব ডাইনামোর হয়ে ঘরোয়া ফুটবলে অভিষেক হয়েছিল তার ২০০৩ সালে। দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে বিভিন্ন দেশের লিগে নিজের ক্যারিশমা দেখিয়েছেন লুকা। ক্রোয়েশিয়া ও বসনিয়ার ক্লাবে খেলে তিনি ২০০৮ সালে যোগ দিয়েছিলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবে টটেনহামে। সেখান থেকে ২০১২ সালে তিনি নাম লেখান স্প্যানিশ লা লিগায়। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাননি। ২০১৮ সালে ব্যক্তিগতভাবে তিনি অর্জন করেছিলেন ব্যালন ডি অ’র। একই বছর তিনি দলকে তুলেছিলেন রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে। ২০০৬ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলা লুকা মদ্রিচ যদি কাতারে শেষ বিশ্বকাপটা খেলে ফেলেন তাহলে ক্রোয়েশিয়ার ভক্তরা মিস করবেন তাদের দেশের অন্যতম সেরা তারকাকে।