শেফালী ঘোষ : আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী

| মঙ্গলবার , ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৮:৩২ পূর্বাহ্ণ

শেফালী ঘোষ (১৯৪১২০০৬)। আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী। তিনি বাংলাদেশের চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরেছেন যা উপমহাদেশের সংগীতকে সমৃদ্ধ করেছে। প্রায় পাঁচ দশকের সংগীত জীবনে তিনি প্রায় সহস্রাধিক গান গেয়েছেন। শেফালী ঘোষ ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ১১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগোপাড়ায়। পিতার নাম কৃষ্ণ গোপাল ঘোষ এবং মাতার নাম আশালতা ঘোষ। শেফালী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপন শেষে ভর্তি হন স্থানীয় মুক্তাকেশী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। পরিবারের অনুপ্রেরণায় বিদ্যালযয়ে অধ্যয়নকালীন সময়ে তার গান গাওয়ার এবং শেখার সূত্রপাত ঘটে। তার গানের প্রথম ওস্তাদ ছিলেন তেজেন সেন। শিল্পীজীবনের সূচনালগ্নে প্রথমে রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত এবং আধুনিক গান শিখতে শুরু করলেও এক পর্যায়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন তিনি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রামের লোকসঙ্গীতঅর্থাৎ আঞ্চলিক গান, পল্লীগীতি, মাইজভাণ্ডারী গান, পীর মুর্শিদের শানে রচিত গান গাওয়ার দিকে আগ্রহী হয়ে উঠেন।

১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রাম বেতারের শেফালী ঘোষ এবং আঞ্চলিক গানের সম্রাট শ্যামসুন্দর বৈষ্ণবের আঞ্চলিক ভাষায় তাদের দ্বৈত কণ্ঠের গান ইথারে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে শেফালী ঘোষ শিল্পী হিসেবেই অংশ নেন। তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত শিল্পী হিসেবে গান গেয়ে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সাহায্য সংগ্রহ করেন। শেফালী ঘোষ ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক পদক, ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমি আজীবন সম্মাননা পদক বাংলা একাডেমি, ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে শিল্পকলা একাডেমি পদকবাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদক লাভ করেন। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ শে ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধমহল্লা ভিত্তিক শালিশী বোর্ড গঠন করা হোক