কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে প্রভাবিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার বোন নুসরাত জাহান তানিয়া। তিনি ওই মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরসহ সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তানিয়া বলেন, আমি বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনার প্রশ্রয় না পেলে–আনভীররা এতটা বেপরোয়া হয়ে ওঠার সাহস পেতো না। পিবিআইতে যখন আমার মামলাটি গেল, সেখানেও অর্থ ঢেলে–তৎকালীন পিবিআই প্রধান বনজ কুমারকে ঘুষ দিয়ে তাদের থেকেও একটি একপেশে তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে আসে বসুন্ধরা গ্রুপ। ওই রিপোর্টেও আনভীরসহ সকলকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আমি নারাজি জানানোর পর সেটাও আদালতে খারিজ হয়ে যায়। খবর বিডিনিউজের।
২০২১ সালে ২৬ এপ্রিল রাতে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ২১ বছর বয়সী মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মুনিয়া ঢাকার মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লার মনোহরপুরে; পরিবার সেখানেই থাকে। মৃত্যুর মাস দুয়েক আগে এক লাখ টাকায় ভাড়া নেওয়া ওই ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তিনি।
তানিয়া বলেন, মুনিয়াকে মেরে ফেলার পর থেকেই ভূমিদস্যু বসুন্ধরা গ্রুপ পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকেই কিনে ফেলতে চেয়েছিল। তৎকালীন আইজিপি বেনজীর এবং গুলশান বিভাগের ডিসি সুদীপ কুমার আনভীরকে বাঁচিয়ে দেওয়ার জন্য নির্লজ্জ ভূমিকা রেখেছিল। পরবর্তীতে গুলশান থানা আনভীরকে অব্যাহতি দিয়েই তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
মুনিয়ার বড় বোন বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে আমি আমার বোনের হত্যার বিচার দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ন্যায়বিচার পাইনি। তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার বান্ধবী তৌফিকা করিমকে দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আনভীরের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে মামলা প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। আমি এসব ব্যাপারে পতিত স্বৈরাচার, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য একাধিকবার আবেদন করি। প্রায় ২৬ পৃষ্ঠার একটি চিঠি লিখে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করি। কিন্তু তিনি সাক্ষাৎ দেননি।
‘বিচারের নামে তামাশা হয়েছে’ মন্তব্য করে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করে মুনিয়ার বোন বলেন, আমি অবিলম্বে ভূমিদস্যু বসুন্ধরার চেয়ারম্যান শাহ আলম (আহমেদ আকবর সোবহান) ও তার ছেলে আনভীরকে গ্রেপ্তার করে মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি হিসেবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করছি।











