প্রফেসর সাহেব, যুদ্ধের পর আমার যাওয়ার কোনো জায়গা ছিল না। পাকিস্তানি সেনারা আমাকে ধর্ষণ করেছিল। এটা যেন আমারই অপরাধ। অন্য লোকের কথা কী বলব। আমার এক কাকা, আমার মরা বাপের আপন ভাই, আমার সম্পর্কে যেসব কথা বলে বেড়িয়েছে; ভাবতেও পারবেন না। কোথাও লজ্জায়, ঘৃণায় নিজের পিতা-মাতার পরিচয় দিতে পারতাম না। এ রকম দুঃসময়ে একদিন শুনলাম শেখ মুজিব বলছেন, ধর্ষিতা মেয়েরা, বাবার নামের জায়গায় আমার নাম লিখে দাও। আর ঠিকানা লেখ, ধানমন্ডি বত্রিশ।
‘শেখ মুজিবের মেয়ে’ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র একাত্তরের জননী রমা চৌধুরী চরিত্রের মুখে উচ্চারিত উপরোক্ত সংলাপ। নাট্যমঞ্চ রেপার্টরির নতুন প্রযোজনা ‘শেখ মুজিবের মেয়ে’ নাটকের প্রথম মঞ্চায়ন গত ৫ জুলাই সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সম্পন্ন হয়েছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ এবং একাত্তরের জননী রমা চৌধুরীর (১৯৪১-২০১৮) জীবনসংগ্রাম এই নাটকের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে। কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরীর ‘পাথরের মূর্তির মতো’ গল্প অবলম্বনে নাটকটির নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন জাহেদুল আলম। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শুভ্রা বিশ্বাস, জাহেদুল আলম, ফারিন মাহমুদ টুশি, সায়েম উদ্দীন, সায়মা জান্নাত, মাশরুর আহমেদ দ্বীপ ও রাবেয়া জামান এঞ্জেলা।
প্রথম মঞ্চায়ন উপলক্ষে মঞ্চায়ন শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যক্ষ রীতা দত্ত, কথাসাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, নাট্যকার, নির্দেশক ও অভিনেতা রবিউল আলম এবং রমা চৌধুরী চরিত্র রূপদানকারী শুভ্রা বিশ্বাস। অনুষ্ঠান সমন্বয়ে ছিলেন নাসরিন সরওয়ার মেঘলা।
অধ্যক্ষ রীতা দত্ত বলেন, এই নাটকে একাত্তরের জননীখ্যাত রমা চৌধুরী, ভাস্কর সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ ও মানবিক চরিত্র আলাউদ্দিন খোকনকে উপস্থাপনের মাধ্যমে নাট্যমঞ্চ রেপার্টরি অনুকরণীয় কাজ করল।











