‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে বিভাজনের রাজনীতি। তারা সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু বিভাজনের মাধ্যমে সব সময় দেশে অস্থিতিশীল করে রাখার চেষ্টা করেছে। কিন্তু হিন্দুদের সবচেয়ে ক্ষতি আওয়ামী লীগই করেছে। শেখ মুজিব ১৯৭৩ সালের ৩ মার্চ সেহারাওয়ার্দী উদ্যানের সৌন্দর্যবর্ধনের কথা বলে রমনা মন্দির গুড়িয়ে দিয়েছিল। আমি এটি শতভাগ সত্য কথা বলছি। এই বিষয় নিয়ে আমি চ্যালেঞ্জ করতে পারবো।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত এগারটার দিকে হাটহাজারী উপজেলার মেখল ইউনিয়নস্থ শ্রী শ্রী পুন্ডরীকধামে রাধাষ্টমীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, ছাত্র জনতাকে পাখির মতো গুলি করে মারা হয়েছে। গত ১৫ বছর মানুষ কথা বলতে পারেনি, ভোট দিতে পারেনি। সবকিছু একটি দল এবং একটি পরিবার কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী আওয়ামী লীগের কাউকে মারা হয়েছে? তারা সাধারণ মানুষের ভয়ে পালিয়ে গিয়েছে। কারণ তাদের রাজনীতি ছিল জনগণের বিরুদ্ধে এবং শোষণের রাজনীতি। আমরা বিএনপির নেতাকর্মীরা ভয় পাই না। আমরা জনগণের জন্য রাজনীতি করি। গত ১৫ বছর কত মামলা, কত নির্যঅতন করা হলো। বিএনপি নেতাকর্মীরা কষ্ট করে তাদের আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এদেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। এটিই হচ্ছে দেশ ও জনগণের প্রতি বিএনপির কমিটমেন্ট। আমার বাড়িতে হামলা হয়েছিল আওয়ামী লীগের সময়। থানায় যাওয়া হলো মামলা করতে। পুলিশ মামলা নেয়নি। কারণ কি? কারণ হচ্ছে হিন্দু হয়ে আমি কেন বিএনপি করি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন বলে তিনি এত বেশি জনপ্রিয়। কিন্তু একটি দলের নেত্রী জনরোষে পালিয়ে যেতে হয়েছে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির হাটহাজারী। এখানে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সব ধর্মের মানুষ নিরাপদে নির্ভীকচিত্তে নিজ নিজ ধর্মের আচার-অনুষ্ঠান পালন করছেন। সব ধর্মের মানুষের মেলবন্ধনে আমাদের মধ্যে চমৎকার ধর্মীয় সম্প্রীতি বিরাজ করছে। বিভিন্ন সময়ে ধর্মীয় নানা ইস্যুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে দাঙ্গা-হাঙ্গামা হলেও এ এলাকার মানুষ শত বছর ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে চলছেন নিখুঁতভাবে।
সাংবাদিক বিপ্লব পার্থ ও প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাসের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন পুন্ডরীক বিদ্যানিধি স্মৃতি সংসদের সহ সভাপতি স্বপন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, মাস্টার অশোক কুমার নাথ। আর্শীবাদক ছিলেন অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের প্রতিনিধি শ্রীমৎ স্বামী পূর্ণব্রতানন্দ মহারাজ, শ্রীমৎ পুলকানন্দ। প্রধান বক্তা ছিলেন পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম সাইফুল ইসলাম, শিক্ষক কুশল বরণ চক্রবর্তী,হাটহাজারী উপজেলা বিএনপির গিয়াস উদ্দিন চেয়ারম্যান, আর কে দাশ রুপু, রাজীব ধর তমাল, উজ্জ্বল বরণ বিশ্বাস, জুয়েল চক্রবর্তী, বাপ্পী দে, গৌবিন্দ প্রসাদ মহাজন প্রমুখ।