যাত্রা শুরু হল আইসিটি (তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি) খাতে চট্টগ্রামের প্রথম টেকনোলজি পার্ক বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের। গতকাল রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পার্কটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আইসিটি খাতে আরো একধাপ এগিয়ে গেল চট্টগ্রাম। দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে এ টেকনোলজি পার্ক। আইটি খাতের প্রসারে যত ধরনের সুবিধা দরকার তার সবটুকুই নিশ্চিত করা হয়েছে এ পার্কে। স্বল্প খরচে জায়গা দেয়ার পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধাসহ এ পার্কে দেড় হাজারের অধিক লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘কালিয়াকৈর হাই-টেক পার্ক’ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মালিকানাধীন নগরের আগ্রাবাদস্থ সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেটের পঞ্চম থেকে দশম ফ্লোরে পার্কটি গড়ে উঠে। এখানে মোট জায়গা আছে এক লাখ ১০ হাজার স্কয়ার ফিট। পার্ক নির্মাণে ব্যয় হয় ২৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের ১১ মার্চ পার্কটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ডাক টেলি যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। এর আগে এ পার্ক স্থাপনে ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই চসিক এবং বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি (এমওই) স্বাক্ষরিত হয়েছিল। পার্কটি থেকে অর্জিত লভ্যংশ সিটি কর্পোরেশন ও হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হবে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) এ এন এম সফিকুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, ইতোমধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটন্যান্ট শেখ জামাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে দেশের ১২টি আইটি প্রতিষ্ঠানকে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৩০টি স্টার্টআপকে ফ্রি স্পেস বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। স্পেস বরাদ্দ পাওয়া র্স্টাটআপ ৬ থেকে ১২ মাস বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবে। মায়েদের সুবিধার্থে ডে কেয়ার ফ্যাসিলিটিও রয়েছে সেখানে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আইটি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রামে আইটি খাতের প্রসারে অনেক ভূমিকা রাখবে বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটন্যান্ট শেখ জামাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক। আইটি খাতের উপযোগী যত সুবিধা থাকা দরকার তার সবটুকু আগে এক জায়গায় ছিল না। যা টেকনোলজি পার্কে রয়েছে। তাছাড়া আগে আইটি সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। এখন এক জায়গায় এসেছে।…অনেকে আছেন যাদের কাছে আইডিয়া আছে। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে কোনো প্রতিষ্ঠান চালু বা তার আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে পারছিল না। তাদের জন্য বা সেইসব র্স্টাটআপকে সার্পোট দিবে এ টেকনোলজি পার্ক।
মেয়রের ফলক উন্মোচন : প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর পার্কটির ফলক উন্মোচন করেন সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এ সময় তিনি বলেন, আর্কিটেক্ট অব ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং সরকারের আইটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে সারা দেশে ৩৯টি হাইটেক পার্ক স্থাপন করা হয়েছে। যার একটি সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেটে স্থাপিত বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক।
মেয়র আরো বলেন, দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর জন্য ডিজিটাল জগতে প্রবেশ এবং এর সঠিক ব্যবহারের বিকল্প নেই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান, কারিগরী ও প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশের যে ভিত্তি তৈরি করে গেছেন সেই পথ ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে দেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
তিনি আরো বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সামনে রেখে আমাদের উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের মাধ্যমে দেশকে উন্নতবিশ্বের কাতারে সামিল করতে হবে। দেশকে ডিজিটালাইজ করার ফলে এ পর্যন্ত সারা দেশে ১৫ হাজার উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও ২০ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান মেয়র।












