শীতের কাপড় কিনতে মার্কেট ও ফুটপাতে ক্রেতাদের ভিড়

জাহেদুল কবির | শুক্রবার , ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৮:৩৮ পূর্বাহ্ণ

নগরীর মার্কেটফুটপাতে বেড়েছে শীতের কাপড় বিক্রি। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা বিভিন্ন বড় বড় শপিং মলবিপণী বিতান ছুটলেও নিম্নবিত্তদের একমাত্র ঠিকানা ফুটপাত। ফুটপাতগুলোতে ইতোমধ্যে শীতের কাপড়ের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। পরিবার পরিজন নিয়ে এসব কাপড় কিনতে ছুটছেন বিভিন্ন বয়সীরা।

ব্যবসায়ীরা জানান, শীতের কাপড়ের ব্যবসা মৌসুমী ব্যবসা। প্রতি বছর শীতকেন্দ্রিক একটা ব্যবসা হয়। তবে এই বছর এখন পর্যন্ত খুব বেশি শীত পড়ছে না। এমনতিই শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের শীতের তীব্রতা বেশি। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে শীতের কাপড়ের বিক্রি বেড়েছে।

গতকাল নগরীর মার্কেটে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সী নারী পুুরুষ শীতবস্ত্র কিনতে এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে চষে বেড়াচ্ছেন। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল মধ্যবিত্তদের মার্কেট নামে খ্যাত পৌর জহুর হকার্স মার্কেটে। এছাড়া রেয়াজুদ্দিন বাজার, তামাকুমণ্ডি লেইন, নিউ মার্কেট, ২ নম্বর গেটের শপিং কমপ্লেঙ, বহদ্দারহাট স্বজন সুপার মার্কেট, চকবাজারের মতি টাওয়ার, গুলজার টাওয়ার, লালখান বাজারের আমিন সেন্টার, আগ্রাবাদ সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট এবং আখতারুজ্জামান সেন্টারে ক্রেতাদের উপচে পড়া ছিল। এছাড়া অভিজাত মার্কেটের মধ্যে প্রবর্তক এলাকার আফমি প্লাজা, মিমি সুপার মার্কেট, স্যানমার ওশ্যান সিটি, ফিনলে স্কয়ার, ইউনেস্কো সিটি সেন্টার, সেন্ট্রাল প্লাজায় একই চিত্র দেখা গেছে।

এসব মার্কেটের বিক্রেতারা জানান, চীনা তৈরি ব্লেজার বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায়। এছাড়া চামড়ার তৈরি জ্যাকেট ২ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে চীনা কম্বল আকারভেদে ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে দেশীয় শাল ও চাদর বিক্রি করছেন ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। বিদেশি ভালো মানের শাল চাদরের দাম পড়ছে ৮০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া সুয়েটার বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকায় এবং উলের তৈরি সোয়েটার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে দেড় হাজার টাকায়।

জহুর হকার্স মার্কেটের অলিদ ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী এমএম ইলিয়াস উদ্দিন জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে শীতের প্রকোপ আগের তুলনায় বেড়েছে। ফলে শীতের কাপড় কিনতে ক্রেতারাও মার্কেটমুখি হয়েছে। শীতের ব্যবসা মৌসুম কেন্দ্রিক হওয়ায় শীত না আসলে বরং ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হয়। তবে শীতের বাজার ধরার জন্য ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ শীতের কাপড় মজুদ করেছেন।

জহুর মার্কেটে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আমীর হোসেন বলেন, জহুর হকার্স মার্কেটে বিভিন্ন মানের কাপড় পাওয়া যায়। এছাড়া দামও মোটামুটি কম থাকে। তাই চিন্তা করেছি, পরিবারের সদস্যদের জন্য কিছু শীতের কাপড় কিনবো।

তামাকুমণ্ডি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, ব্যবসায়ীরা দেশে ও দেশের বাইরে থেকেও নানা ধরণের শীতের কাপড়ের সংগ্রহ নিয়ে এসেছেন। ফলে মার্কেটে ক্রেতারা দেখে শুনে পছন্দে কাপড় কিনতে পারছেন। এছাড়া মার্কেটের আশপাশে বিভিন্ন ফুটপাতেও ভ্রাম্যমাণ হকাররা শীতের কাপড়ের সংগ্রহ নিয়ে এসেছে। নিম্নবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষ সেই সব জায়গা থেকে কেনাকাটা করছেন।

অন্যদিকে নগরীর ২নং গেট শপিং কমপ্লেঙের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, শীতের কাপড়ের বিক্রি তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। তবে তা এখনো প্রত্যাশিত নয়। প্রতিটি ব্যবসায়ী শীতের বাজারকে কেন্দ্র করে প্রচুর পণ্য নিয়ে এসেছেন। আশা করি আগামী দুই সপ্তাহ পরে পুরোদমে বেচাবিক্রি শুরু হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফয়সালের স্ত্রী-বান্ধবী শ্যালকের স্বীকারোক্তি
পরবর্তী নিবন্ধনগরীতে বাড়ছে শীতের প্রকোপ