ফটিকছড়ির ভূজপুরে ১০ বছরের শিশু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামিকে দীর্ঘ ১৩ বছর পর লোহাগাড়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার নাসির প্রকাশ নাসিম (৪৫) পূর্ব ভূজপুর এলাকার নূরু আহমদের ছেলে। গত রোববার লোহাগাড়ার চুনতি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব জানায়, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ফটিকছড়ির ভূজপুর এলাকার শাহ পরানের সাথে দেলোয়ারা বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের ঘটক ছিলেন শাহ পরানের ভগ্নিপতি নাসির ওরফে নাসিম। কিন্তু বিয়ের পর থেকে শাহ পরান বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে স্বামীকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান দেলোয়ারা বেগম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দেলোয়ারাকে হত্যার হুমকি দেয় সাবেক স্বামী। শাহ পরানকে তালাক দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে শাহ পরান ও নাসির দেলোয়ারাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ২০১০ সালের ১ এপ্রিল ভোর চারটার দিকে শাহ পরান তার ভগ্নিপতি নাসিরসহ শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে স্ত্রী দেলোয়ারাকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় তার চিৎকারে ছোট বোন ফারহানা ইয়াছমিন ও তার মা জেগে উঠে শাহ পরানকে বাধা দিলে ফারহানাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে শাহ পরান ও নাসির। এতে ফারহানা ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ সময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে ছুরি ও একটি ব্লেড রেখে পালিয়ে যায় শাহ পরান ও নাসির। পরবর্তীতে প্রতিবেশীরা দেলোয়ারা বেগমকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এই ঘটনায় দেলোয়ারার মা বাদী হয়ে শাহ পরান ও নাসিরকে আসামি করে ভূজপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে শাহ পরানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও জামিনে বের হয়ে পলাতক ছিলেন। ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল এই মামলায় শাহ পরানকে মৃত্যুদণ্ড ও নাসিরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন নাসির। গত ২৬ মে রাউজানের নোয়াপাড়া থেকে শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব–৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) নূরুল আবছার জানান, গত ২৬ মে শাহ পরানকে গ্রেপ্তারের দুইদিন পর নাসিরের অবস্থানও শনাক্ত করা হয়।
গত ২৮ মে লোহাগাড়ার চুনতি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আরও বলেন, ঘটনার পরপরই পালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে চলে যায় নাসির। সেখানে বিভিন্ন এলাকায় নানা অনুষ্ঠান ও খাবার হোটেলে বাবুর্চির কাজ করতো। গ্রেপ্তারের ভয়ে এক জায়গায় বেশিদিন অবস্থান করতো না।