শিশু নিপীড়নকারীদের উপযুক্ত সাজা প্রয়োজন

পারভীন রব্বানী | শুক্রবার , ১৫ নভেম্বর, ২০২৪ at ৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ

মুনতাহা! মিষ্টি মেয়েটার ছবি দেখলে বুকের ভিতর হিম হয়ে উঠে। সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশ কয়দিন ধরে ঘুরছিলো নিষ্পাপ পাঁচ বছরের বাচ্চা মেয়েটির ছবি, নিঁখোজ সংবাদ হিসাবে। একদিন ঠিকই খবর পাওয়া গেলো তবে জীবিত না, মৃত হিসাবে। এখন সবাই জেনে গিয়েছে কীভাবে মুনতাহার টিচার, তার মা, কয়েকজন প্রতিবেশী মিলে বাচ্চা মেয়েটিকে মেরে ফেলেছে। কতোটা মর্মান্তিক, কতোটা বেদনাদায়ক চিন্তা করা যায় না। নারীরা নাকি মায়ের জাত! মমতাময়ী, দরদী, স্নেহ, মায়া, ভালোবাসায় আবৃত মায়ের মন। কিন্ত প্রতিহিংসাপরায়ণ এই নারীরা কখনো হয়ে যায় রাক্ষুসী, শিশু খেকো। আজও সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখতে পাই কিছু শিশু হারিয়ে যাচ্ছে। ঘটেই যাচ্ছে এসব ঘটনা।

প্রায়শই আমরা দেখতে পাই, শিশুদের অপহরণ করে পরিবারের কাছে মোটা অংকের টাকা চাওয়া হয়, অথবা প্রতিহিংসার কারণে মেরে ফেলা হয়। অপরাধীগণ খুব কমই শাস্তি পায়, বেশিরভাগই আইনের ফাঁক গলিয়ে কোনো না কোনোভাবে বেরিয়ে আসে। আবার নতুন করে জাল বিছায়। এ ক্ষেত্রে ছেলে শিশুদের চেয়ে মেয়ে শিশুরা বেশি ভুক্তভোগী। আর মেয়ে শিশুরা তো অহরহ ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। ৩ বছরের নিষ্পাপ মেয়েটিও ৭০ বছরের বুড়োর হাত থেকে রক্ষা পায় না। গ্রামাঞ্চলে, মফস্বল শহরে এগুলি বেশি ঘটে। শিশুরা নিজের বাড়িতেও অনেক সময় নিরাপদ নয়। খেঁটে খাওয়া মা বাড়িতে সৎমা, জা, মামী, চাচী, কিংবা চাচা, মামা অথবা প্রতিবেশীর জিম্মায় শিশুকে রেখে যায়। কিন্তু একদিন ভুলিয়ে ভালিয়ে এই আপন জনেরাই শিশুটির অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলে। এসব ঘটনা আমাদের অজানা নয়। আবার দেখতে পাই, মাদ্রাসার শিশুরা প্রায়ই তাদের শিক্ষকদের দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। কী ভয়াবহ অবস্থা! আমাদের এই সমাজ বড়ই নিষ্ঠুর, নির্মম আমরা মানুষেরা। ধনী কিংবা গরীব, সব বাবা মা’র কাছে সন্তান বড়ই আদরের সম্পদ। সন্তানদের নিয়ে নানারকম স্বপ্ন দেখেন। আমাদের অভিভাবকদের সদা সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। কাজের মানুষ, ড্রাইভার, আত্মীয় স্বজন কিংবা প্রতিবেশীদের কাছ থেকে শিশুরা যেনো নিপীড়িত না হয়। বহু কর্মজীবী মহিলা মুরুব্বি না থাকায় শুধুমাত্র কাজের মানুষের ওপর ভরসা করে অবুঝ বাচ্চাকে বাসায় রেখে যান। আর এই সুযোগ নেয় তারা। বহু মর্মস্পর্শী ঘটনা ঘটে, যা সত্যি হৃদয়বিদারক। এ ছাড়া বাল্যবিবাহ, বিপজ্জনক কাজে শিশুদের নিয়োগএদের ভবিষ্যত গড়ায় হুমকির সম্মুখীন। শিশু অপহরণকারীনিপীড়নকারীদের জন্য কঠিনতম আইনের মাধ্যমে উপযুক্ত সাজা প্রয়োজন। শিশুদের নিরাপদ আবাস এবং নিরাপত্তাসহ স্বাচ্ছন্দ্যকর জীবন কেবল আমরাই দিতে পারি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনবান্ন
পরবর্তী নিবন্ধনবনির্বাচিত আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আনতে পারবেন?