বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি চট্টগ্রামে ‘ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম : চট্টগ্রাম প্রেক্ষিত’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমি চট্টগ্রামের আয়োজনে বিশ্ব শিশুশ্রম নিরসন উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম এবং ঘাসফুল ও ইপসার সহযোগিতায় শিশুশ্রম উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব মো মোছলেহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনা শুরু হয়। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন সমাজবিজ্ঞানী ও গবেষক ড. মনজুর–উল–আমিন চৌধুরী ।
প্যানেল আলোচক ছিলেন ইপসার প্রধান নির্বাহী মো. আরিফুর রহমান, বিলস্ এর চেয়ারম্যান এ এম নাজিম উদ্দিন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম পরিদর্শক (সাধারণ) বিশ্বজিৎ শর্মা। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঘাসফুলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আফতাবুর রহমান জাফরী, চিটাগাং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনির্ভাসিটির রেজিষ্টার আনজুমান বানু লিমা ও ইপসার ম্যানেজম্যান্ট এডভাইজার, ড.শামসুন্নাহার চৌধুরী লুপা।
অনুষ্ঠানে শিশুশ্রম চট্টগ্রাম প্রেক্ষিত বিষয়ক দুইটি মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপন করেন ঘাসফুলের পক্ষ থেকে প্রকল্প সম্বয়কারী সিরাজুল ইসলাম ও ইপসার প্রকল্প সমন্বয়কারী মোহাম্মদ আলী শাহিন। উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়ক এনামুল হাসান, স্বপ্নীল ব্রাইট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. আলী শিকদার, কোডেকের অলকা চৌধুরী, ইউসেপের নিন্দিতা চক্রবর্তী, এডাবের মো. ফোরকান, মমতার কামরুন্নাহার, শিশু প্রতিনিধি সোনিয়া আকতার, জিসান ও আকলিমা আকতার।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক বলেন, বাংলাদেশে মোট শিশু ৪ কোটি তম্মধ্যে ১৭ শতাংশ কন্যা শিশু। সমপ্রতি প্রকাশিত জাতিসংঘ প্রতিবেদনে জানা যায় এবারের ভয়াবহ বন্যায় ২০ লাখের বেশি শিশু ঝুঁকির মধ্যে, ৭ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত, মে থেকে আগস্টে চার মাসের দুর্যোগ আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৫০ লাখ। জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসী ফোরোমের তথ্যে জানা যায় চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে আগস্ট পর্যন্ত আট মাসে ২২৪ কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে, আত্মহত্যা করেছে ১৩৩ কন্যা শিশু এবং পানিতে ডুবে মারা গেছে ১৮৭ কন্যাশিশু। ২০২২ সালের জাতীয় শিশুশ্রম জরিপের তথ্যমতে জানা যায় শিশুশ্রমিক বেড়েছে ১ লাখ, ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের তালিকা দীর্ঘ হয়েছে ৩৮ থেকে ৪৩। এই বাস্তবতায় বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ পালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, শিশুশ্রম দন্ডনীয় অপরাধ যদিও প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বাংলাদেশের দন্ডটা লঘু। অসমতা ও বৈষম্যই হচ্ছে শিশুশ্রমের মূলকারণ। শিশুশ্রম বিষয়ক সরকারি প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের সক্ষমতা ও স্বচ্ছতা প্রশ্নাতীত নয়। ন্যায় ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় হচ্ছে উত্তরণের সর্বোত্তম উপায়।
প্যানেল আলোচকরা বলেন, শিশুশ্রম হ্রাসে প্রতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে এবং অংশীজনদের আশাবাদী ও দৃঢ় প্রত্যয়ী হতে হবে। সরকার ও উন্নয়ন সংগঠনসমূহের পাশাপাশি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানসমূহের সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে এগিয়ে আসতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।