শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য

স্বপ্নীল বড়ুয়া কনা | মঙ্গলবার , ১৭ জুন, ২০২৫ at ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ

একটি শিশুর শারীরিক বৃদ্ধির পাশাপাশি তার মানসিক বিকাশও সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রায়শই শিশুর খাবার, পোশাক কিংবা পড়ালেখা নিয়ে যত্নবান থাকলেও তার মানসিক চাহিদাগুলোর প্রতি তেমন মনোযোগ দিই না। অথচ শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যই তার ব্যক্তিত্ব, আচরণ এবং ভবিষ্যৎ জীবনের ভিত্তি তৈরি করে।

প্রথমেই বলা প্রয়োজন, সুস্থ মানসিকতা শিশুর মধ্যে আত্মবিশ্বাস, সংবেদনশীলতা ও সামাজিক বোধ গড়ে তোলে। একজন মানসিকভাবে সুস্থ শিশু নিজের আবেগ বুঝতে ও তা প্রকাশ করতে পারে, অন্যের কথা শুনতে ও সহানুভূতি দেখাতে পারে। দ্বিতীয়ত, শিশুকালেই যদি মানসিক সমস্যাগুলোর লক্ষণ চিনে না নেওয়া হয়, তাহলে তা ভবিষ্যতে জটিল রূপ নিতে পারে। বিষণ্নতা, উদ্বেগ, আত্মবিশ্বাসের অভাব এমনকি আত্মবিরোধী আচরণের জন্ম হয় অনেক সময় অবহেলিত মানসিক চাহিদা থেকেই। তাই সময়মতো যত্ন, বোঝাপড়া ও ভালোবাসা দিতে না পারলে শিশুর অগ্রযাত্রা থেমে যেতে পারে।

তৃতীয়ত, শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অপরিসীম। বাড়িতে ভালোবাসা, নিরাপত্তা ও সহানুভূতির পরিবেশ এবং বিদ্যালয়ে সহযোগিতাপূর্ণ শিক্ষার সুযোগ পেলে শিশুরা নিজেদের ভাবনা ও আবেগ প্রকাশে সাহসী হয়ে ওঠে। শাস্তি নয়, সহানুভূতিশীল নির্দেশনা হতে হবে তাদের পথপ্রদর্শক।

শিশু মানেই ফুলের মতো কোমল, আর এই কোমলতাকে যত্ন না দিলে তা শুকিয়ে যেতে পারে। শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা করা মানে শুধু একটি শিশুকে সুস্থ রাখা নয়, বরং একটি প্রজন্মকে আলোকিত করে তোলা। তাই আমাদের প্রতিটি শিশুর জন্য একটি ভালোবাসাময়, সহানুভূতিপূর্ণ ও নিরাপদ মানসিক পরিবেশ নিশ্চিত করাই হোক আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসম্মান নিজ গুণে অর্জন করতে হয়
পরবর্তী নিবন্ধজল-জোছনার শহরে আবৃত্তি চর্চার সেকাল