আমরা সবাই ওয়াকিবহাল প্রত্যেক শিশুর প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল তার পরিবার। কেননা প্রত্যেক শিশু তার মূল শিক্ষাটুকু পরিবার থেকে পেয়ে থাকে। আর তার মূল শিক্ষার প্রধান হল তার পিতা–মাতা। শিশুর আদর্শ হল তার পিতা–মাতা দুজনেই। শিশু তাদের দুজনের কাছ থেকেই সমান আদর–যত্ন ও মনোযোগ প্রত্যাশা করে। শিশুর মানসিক বিকাশে পিতা–মাতার ভালোবাসা ও সান্নিধ্যের কোনো বিকল্প নেই, পরিবারে শিশু পিতা–মাতার আদর –ভালোবাসা না পেলে তারা সবসময় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে বলে মন্তব্য করেছেন মনোবিজ্ঞানীর, যা তাদের মানসিক বিকাশের প্রধান অন্তরায়। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কর্ণধার, তারাই একদিন স্ব–শিক্ষিত হয়ে এ দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই শিশুদের মানসিক বিকাশ ও ব্যক্তিত্ব গঠনে পিতা–মাতাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। পরিবার তথা সমাজে তাদের ব্যক্তিগত আচরণ, পাঠ্যাভ্যাস, সমাজের অন্য মানুষের প্রতি আচরণ, দায়িত্বশীলতা, ক্ষমা ও উদারতার দ্বারা শিশুরা প্রভাবিত হয়। আর শৈশবে যদি পিতা–মাতা তাদের মধ্যে এ সব মানবীয় গুণাবলি প্রবেশ করাতে পারেন তাহলে আজীবন তা শিশুদের জন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে। একজন যোগ্য পিতা ব্যতীত যেমন একটি পরিবার কল্পনা করা যায় না তেমনি শিশুদের বিকাশ ও তাদের অধিকার বাস্তবায়ন ব্যতীত গোটা দেশ তথা বিশ্বের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। শিশুর সামগ্রিক বিকাশ ও কল্যাণের মাধ্যমে আজকের বিশ্ব হয়ে উঠবে সুন্দর ও শান্তিময়। আর শিশুর এ সামগ্রিক বিকাশে পিতা–মাতাকে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে হবে। পরিবার তথা পিতা–মাতা দুজনেই হল একজন শিশুর মানসিকভাবে বেড়ে উঠার অন্যতম মাধ্যম। শিশুর মনের আনন্দই তার দেহ–মনের শক্তির মূল উৎস। সুশিক্ষা, নিরাপত্তা, সুস্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও ভালোবাসা দিয়ে শিশুকে শারীরিক ও মানসিকভাবে পূর্ণ বিকশিত করে গড়ে তুলতে পারলেই প্রকৃত শিক্ষিত জাতি গড়ে তোলা সম্ভব। পৃথিবীতে কোনো শিশুই বিবেক, নৈতিকতা, মূল্যবোধ প্রভৃতি মানসিক গুণাবলী নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না। আবার কোনো কিছু সে একাকী শিখতে পারে না। শিশুর সঠিক বিকাশের স্বার্থে পিতা–মাতাকে তাদের শিশুর সাথে শাসনসুলভ আচরণ ও পারস্পরিক দাম্পত্য কলহ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত।