শিশুর বিকাশে…

সুব্রত কুমার নাথ | সোমবার , ২২ আগস্ট, ২০২২ at ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষা ও নৈতিক গুণাবলি অর্জনের পাশাপাশি সব শিশু যদি বিনোদন, খেলাধুলা, শরীরচর্চা ও বই পড়ার প্রতি মনোযোগী হয়, তবে তাদের মানসিক, সামাজিক ও শারীরিক বিকাশ সাধিত হয়। এজন্য শিশুদের শিক্ষায় আলোকিত করা ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহ-শিক্ষা পাঠ্যক্রমের প্রতি জোর দেওয়া যেমন আবশ্যক, তেমনি তাদের অধিকতর মানসিক বিকাশের জন্য প্রতি উপজেলায় খেলার মাঠ, শিল্পকলা ও শিশু একাডেমি সহ গণপাঠাগার স্থাপনও একান্ত জরুরি। আমাদের জেলা ও বিভাগীয় শহরে এসবের ব্যবস্থা থাকলেও উপজেলা পর্যায়ে তা নেই বললেই চলে। এসব ব্যবস্থা না থাকার কারণে আজকাল অধিকাংশ শিশু মোবাইল আসক্তি সহ নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে পড়ছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় কিশোর গ্যাং সৃষ্টি এর অন্যতম কারণ। সংস্কৃতিচর্চার পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় শিশুরা বখাটেপনা, মাদকাসক্তি সহ নানা অপরাধকর্মে জড়িয়ে যাচ্ছে।
ফলে, দেশে সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও অপরাধপ্রবণতা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মনে রাখতে হবে, শরীরচর্চার মধ্য দিয়ে একজন শিশুর শারীরিক সক্ষমতা বাড়ে। পরবর্তীতে তারা ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, মানসিক অস্থিরতা সহ নানা অসুখ থেকে মুক্তি পায়। খেলাধুলায় শিশুদের কর্মক্ষম ও মনকে সজীব রাখে। তাদের মধ্যে জয় পরাজয় মেনে নেওয়ার সাহস বাড়ে ও নেতৃত্ববোধ গড়ে ওঠে। বিনোদন বা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড শিশুদের মনের উৎকর্ষ সাধন সহ সুন্দর মননশীলতা সৃষ্টি করে। এছাড়া অবসরে শিশুরা পাঠাগারে গিয়ে বইয়ে ডুব দিলে তাদের জ্ঞান বৃদ্ধির সাথে সাথে চিন্তাশীলতারও উন্মেষ ঘটে। শিশুদেরকে এসব চিত্তাকর্ষক কাজে মনোযোগী রাখতে পারলে তারা অপরাধপ্রবণতা ও অন্যায় আচরণ থেকে দূরে সরে যাবে। এদের হাত ধরেই একদিন সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে। এসব বিবেচনায় শিশুদের জন্য দেশের সর্বত্র পার্ক, শিল্পকলা ও শিশু একাডেমি, খেলার মাঠ, শরীরচর্চা কেন্দ্র, গণপাঠাগারের মতো সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা, ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সহযোগিতা ও অভিভাবকদের সচেতনতা। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের শিশুদের জন্য একটি সুন্দর বাসযোগ্য ঠিকানা উপহার দিতে পারবো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতোমাকেই চাই
পরবর্তী নিবন্ধজয়তু আজাদী। জয়তু কবিতা