শিশুর প্রতিভা প্রকাশের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে আমাদের

ইসমাইল জসীম | বৃহস্পতিবার , ৭ জানুয়ারি, ২০২১ at ৬:১৭ পূর্বাহ্ণ

নিজেকে প্রকাশ করতে কে না চায়? যে মাধ্যমে হোক, যে যে বয়সের হোক। নিজেকে প্রকাশ করাটা মনুষ্য জাতির একটি স্বাভাবিক প্রবণতা। একজন শিশু যার আদৌ কোন বোল ফোটেনি, সেও নিজেকে প্রকাশ করতে চায় তার কান্না বা হাসির মাধ্যমে। সে নিজেকে প্রকাশ করতে চায়, অন্যের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায়। নিজেকে প্রকাশ করা বলতে আমরা নিজের ভেতর সুপ্ত থাকা প্রতিভাকে জাগ্রত করাই বুঝি। প্রতিটি শিশু জন্মগত ভাবে কোন না কোন প্রতিভা নিয়েই জন্মায়। এটা তার স্বাভাবিক গুণ। যা সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমা। এ প্রতিভাকে প্রকাশ বা বিকাশ করাটা একটি স্বতন্ত্র ব্যাপার। এটা নির্ভর করে, পরিবার, পরিবেশ, পরিস্থিতি ও প্রকৃতির উপর। এ চার ‘প’ এর উপর নির্ভর করে আরেকটি ‘প’ যা এই শিশুর প্রতিভা। অনেক শিশুই এ সবের প্রতিকূলতার কারণে নিজের প্রতিভাকে বিকশিত করতে ব্যর্থ হয়। নিজের ভেতর ঘুমিয়ে থাকা প্রতিভাকে অকালেই গলা টিপে হত্যা করে। শিশুর প্রতিভাকে জাগ্রত করতে, তা প্রকাশ ও বিকশিত করতে যাদের ভূমিকা অগ্রগণ্য বলে বিবেচিত তারা হলেন অগ্রজ। কিন্তু বর্তমানে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে এ অগ্রজরাই শিশুর মনোবিকাশের প্রধান অন্তরায়। কবির মতো আমাদেরও মনে রাখতে হবে ‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে’ এখানে কবি শিশুর পিতা বলতে কেবল ভবিষ্যৎ পিতা হওয়াকে বোঝান নি। তার প্রতিভাকেও বুঝিয়েছেন। আমাদের প্রত্যেকের নজর দেয়া উচিত আমার পরিবারের শিশুটির প্রতি যে কিনা আমার চোখের সামনেই বেড়ে উঠছেন। আপনাকে আমাকে কিছুই করতে হবে না। তাকে কেবল তার মতই বেড়ে ওঠার একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করে দিন। গ্লোবাল ভিলেজের যুগে শিশুদের প্রকাশের ক্ষেত্রটি আজ কোন গণ্ডির ভেতর সীমাবদ্ধ নয়, নিজেকে বিশ্বব্যাপী মেলে ধরার, নিজেকে প্রকাশ করার অবারিত সুযোগ। তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে আজ প্রতিটি শিশুর হাতে রয়েছে নিজেকে প্রকাশ করার সহযোগী মাধ্যম। শিশুর সাথে সাথে যে কাজটি আমাদের করতে হবে তা হচ্ছে, লক্ষ্য রাখতে হবে শিশুটির গতিবিধি। কারণ প্রতিটি প্রযুক্তির দু’টি দিক রয়েছে। ভাল আর খারাপ।
অপার সম্ভাবনার প্রতিভা নিয়ে সন্তানটি কোনদিকে যাচ্ছে? ভাল নাকি খারাপের দিকে? তার দায়িত্ব কিনতু আমাদের। তাদের পথ নির্দেশনা দেবার, সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার। তার নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার। আপনার শিশুটি নিরাপদ মানেই আপনি নিরাপদ, দেশ নিরাপদ। সঠিকভাবে সে যদি তার প্রতিভাকে প্রকাশ করতে পারে তবেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো সামনের দিকে ।
লেখক : প্রাবন্ধিক, শিশুসাহিত্যিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধজনগণের কল্যাণ
পরবর্তী নিবন্ধ‘প্রতিটি কৃষ্ণাঙ্গ শিশু স্বপ্নের এক নতুন দিগন্ত খুঁজে পাবে’