শিশুদের ডেঙ্গুর ৮৭% ডেন-২ ধরন : গবেষণা এটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ

আজাদী ডেস্ক | সোমবার , ১৬ অক্টোবর, ২০২৩ at ৪:২৬ পূর্বাহ্ণ

মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া শিশুদের বেশিরভাগই এবার ‘ডেন২’ ধরনে আক্রান্ত হয়েছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। এটিকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলা হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে ৮৭ শতাংশই ‘ডেন২’ ধরনে এবং বাকি ১৩ শতাংশ শিশু ‘ডেন৩’ ধরনে আক্রান্ত হয়েছে বলে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের গবেষণায় উঠে এসেছে। শনিবার ঢাকার আগারগাঁওয়ের শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে এ গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন হাসপাতালের পরিচালক ও গবেষণার প্রধান গবেষক অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং আইসিডিডিআরবির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী মো. মোস্তাফিজুর রহমান। বর্তমানে ডেন, ডেন, ডেন৩ ও ডেন৪ ধরনের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে দেশের মানুষ। চলতি বছর ডেঙ্গুতে যে ১ হাজার ১৫৮ জনের প্রাণ গেছে, তার মধ্যে ১৫ বছর পর্যন্ত শিশুর সংখ্যা ১২৭ জন। খবর বিডিনিউজের।

অধ্যাপক জাহাঙ্গীর জানান, চলতি বছরের জুন, জুলাই ও আগস্টে শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত ১ হাজার ৩৯ জন শিশুর মধ্যে থেকে ৭২২ জন শিশুর ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমণের রোগতাত্ত্বিক ও সেরোটাইপ নির্ধারণের ওপর একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ৭২২ জন শিশুর মধ্যে ১০৪ জনের এবং ডেঙ্গুর উপসর্গ ছিল কিন্তু এনএসওয়ান বা আইজিএম পরীক্ষায় ডেঙ্গু ভাইরাস ধরা পড়েনি এমন ৫০ জন ভর্তি রোগীর রক্ত ও ন্যাজোফ্রানজিয়াল সোয়াব সংগ্রহ করে আইসিডিডিআরবির পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়।

তিনি বলেন, ১১৩টি ডেঙ্গু পজিটিভ নমুনায় ৮৭ শতাংশে ডেন২ এবং ১৩ শতাংশে ডেন৩ এর উপস্থিতি পাওয়া যায়। জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষায় দেখা যায়, বর্তমানে শিশুদের ভেতর ৮৭ শতাংশে ডেন২ এর যে উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে, তার জিনগত বৈশিষ্ট্য ২০১৮ সালের ডেন২ এর জিনগত বৈশিষ্ট্যের কাছাকাছি। যে ১৩ শতাংশে ডেন৩ এর উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে, তার জিনগত বৈশিষ্ট্য ২০১৭ সালের ডেন৩ এর জিনগত বৈশিষ্ট্যের কাছাকাছি।

গবেষণায় দেখা যায়, এনএসওয়ান ও আইজিএম নেগেটিভ ৫০টি নমুনার মধ্যে আরটিপিসিআর পরীক্ষার মাধ্যমে ১৭টি (৩৪%) ফলস নেগেটিভ ও ডেঙ্গু নেগেটিভ রোগীর মধ্যে ১৯ শতাংশ রোগী এবং ডেঙ্গু পজিটিভ রোগীর মধ্যে ১২ শতাংশ রোগী ইনফ্লুয়েঞ্জা ও রেসপাইরেটরি সিনসাইটাল ভাইরাসে আক্রান্ত ছিল। গবেষণায় অংশ নেওয়া শিশুদের মধ্যে ৮৭ শতাংশ ঢাকা মহানগরীর।

অধ্যাপক জাহাঙ্গীর বলেন, গবেষণায় অংশ নেওয়া ৭২২ জন রোগীর মধ্যে ৭১ শতাংশ (৫১৬) রোগী বিপদ সংকেতসহ এবং ২৯ শতাংশ (২০৬) রোগী বিপদসংকেতহীন ভর্তি ছিল, যাদের মধ্যে ১৭ জন মারা গেছে। মৃত্যুবরণকারী ১৭ জন রোগীর মধ্যে ১৬ জনই বিপদ সংকেতসহ ভর্তি হয়েছিল।

তিনি জানান, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ৯০ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে ফিরে গেছে। ৮ শতাংশ রোগী স্বেচ্ছায় অন্যত্র চলে গেছে এবং ২ শতাংশ রোগী মারা গেছে। মৃত্যুবরণকারী রোগীদের ভেতর বেশিরভাগই বিভিন্ন ধরনের জটিলতা নিয়ে খারাপ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশহরটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি : মেয়র
পরবর্তী নিবন্ধযাবতীয় কার্যক্রম শেষ ধাপে, নভেম্বরেই তফসিল