শিশুদের খেলা চালাতেই চিড়েচ্যাপ্টা চট্টগ্রামের রেফারিরা

| বুধবার , ৩০ আগস্ট, ২০২৩ at ১০:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ক্রিকেট কিংবা ফুটবল। দল হারলেই রেফারী কিংবা আম্পায়ারের উপর দোষ চাপায় পরাজিত দল। সারা বিশ্বে সেটাই এক ধরনের অলিখিত নিয়ম। কিন্তু একজন রেফারী মাঠে কিভাবে খেলা পরিচালনা করে সেটাও দেখার বিষয়। একজন রেফারী মাঠে খেলা চালাতে কতটা দক্ষ, কতটা মাঠ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন সেটাও বড় বিবেচ্য বিষয়। চট্টগ্রামের মাঠে রেফারিং নিয়ে অভিযোগ নতুন কিছু নয়। তবে মাঠে চট্টগ্রামের রেফারীদের দক্ষতা নিয়েই বেশি প্রশ্ন উঠে। তাছাড়াও চট্টগ্রাম জেলা রেফারী সমিতির যিনি সাধারন সম্পাদক তিনি মাঠের বাইরে থেকে রেফারিদের নিয়ন্ত্রন করেন বলেও অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। এ জন্য কোন সিনিয়র রেফারী এখন নেই এই রেফারী সমিতিতে। ফলে অদক্ষ, অনভিজ্ঞ রেফারীদের মাঠে নামিয়ে দিয়ে কেলেংকারী ঘটানো হচ্ছে। সামান্য শিশুদের খেলা চালাতে গিয়েই চিড়েচ্যাপ্টা চট্টগ্রামের রেফারীরা। চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন আয়োজিত একাডেমি কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের দুটি সেমি ফাইনাল হয়ে গেল গতকাল এবং গত সোমবার। দুটি ম্যাচেই একই নাট্যের দুরকম চিত্রায়ন হলো। আগেরদিন শোভনীয়া একাডেমি এবং আবদুস সোবহান ফুটবল দলের মধ্যকার ম্যাচে একটি শট বল গোল লাইন অতিক্রম করলেও রেফারী গোল দেয়নি। কিন্তু গতকাল আনোয়ারা একাডেমি এবং এ প্লাস একাডেমির মধ্যকার ম্যাচে একই ধরনের গোল হলেও রেফারী গোলের বাঁশি বাজিয়েছেন। আর তাতে দুদিনই খেলা বন্ধ ছিল। গতকালতো মারামারিও হলো। দু’ দিনই রেফারীদের মাঠে বন্দী থাকতে হয়েছে দীর্ঘ সময়। আগের দিন রেফারীদের বের করতে গিয়ে গালি শুনতে হয়েছে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদেরও। আর সেখানেই উঠেছে প্রশ্নটা।

যে রেফারীরা শিশুদের খেলা চালাতে পারেনা। তাদের দিয়ে কিভাবে আরো বড় ফুটবল আসর চালানো যাবে। আর এভাবে বারবার রেফারীর ভুলে হেনস্তা হতে হচ্ছে ক্রীড়া সংগঠকদেরও। মাঠে আটকা থাকতে হচ্ছে তাদেরও। গতকাল যেমন বেশ কয়েকজন প্রবীণ ক্রীড়া সংগঠক বলেছেন এভাবে রেফারীদের জন্য বারবার অঘটন ঘটা, কর্মকর্তাদের হেনস্তা হওয়া, স্টেডিয়ামের ক্ষয় ক্ষতি সাধন হওয়া। এসব আর কতদিন। ফুটবল মাঠে রেফারীদের ভূমিকাটা বিচারকের। কিন্তু চট্টগ্রামের রেফারীরা যেন মাঠের চাইতে মাঠের বাইরে আলোচনায় থাকতে বেশি পছন্দ করে। রেফারী সমিতিতে জুয়া কান্ড, অনৈতিক কার্যকলাপ এসবের কারনে শুধু চট্টগ্রামে নয় সারা দেশেই বেশ পরিচিত চট্টগ্রামের রেফারী সমিতি। কিন্তু মাঠের কান্ডে বারবার ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে ফেলছে রেফারীরা। চট্টগ্রামের রেফারীদের এই ন্যক্কারজনক ঘটনার কারনে কোমলমতি শিশুদের মনে বিষের জন্ম দিচ্ছে। নিয়ম, নীতি আর আইনের মধ্যে থেকে খেলা চালাতে পারছেনা রেফারী সমিতির বর্তমান সদস্যরা। ফলে লাঞ্চিত হতে হচ্ছে তাদের। মাঠে খেলা শিশুরা যেমন মনের মধ্যে আঘাত নিয়ে মাঠ ছাড়ছে তেমনি নতুন যে রেফারীটা খেলা চালালো তিনিও রেফারীং এর প্রতি অনাগ্রহী হয়ে উঠবে। রেফারী সমিতি যারা পরিচালনা করেন তারা যেন বুঝেনা সেমি ফাইনালের মত খেলা কোন মানের রেফারী দিতে হয়। হোকনা সেটা শিশু কিংবা কিশোর পর্যায়। যে সব রেফারীদের একাডেমি কাপে খেলা পরিচালনা করেছে প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই তাদের বিরুদ্ধে উঠেছে অদক্ষতা, অপরিপক্কতা আর পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ। আর সে অভিযোগ একেবারে ক্ষোভে পরিণত হয়েছে দুটি সেমিফাইনালে। রেফারীদের এহেন ভূমিকায় বিরক্ত ক্রীড়া সংগঠক এমনকি স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাও। কিন্তু রেফারীদের কিংবা তাদের নেতাদের যেন সেদিকে কোন খেয়ালই নেই। জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের একাধিক কর্মকর্তা গতকাল বেশ ক্ষোভের সাথে বলেন সামনে প্রিমিয়ার লিগ। এভাবে চলতে থাকলে জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন কিংবা জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা আর মাঠে আসবেনা। কে শুধু গালি শুনবে। ফলে নতুন করে ভাবতে হবে রেফারীং নিয়ে, তেমনটি বলছেন ক্রীড়া সংগঠকরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএশিয়া কাপে লিটনকে ছাড়াই প্রথম ম্যাচ খেলতে হবে টাইগারদের
পরবর্তী নিবন্ধফাইনালের টিকিট পেল আনোয়ারা একাডেমি