শিশুকে গলা টিপে হত্যা

ঘরের ভেতর পাওয়া গেল মরদেহ ধর্ষণের পর খুনের অভিযোগ, যুবক আটক নগরের চান্দগাঁও মৌলভী পুকুর পাড়ে ঘটনা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ

বাকের ও নাজিয়া দম্পতির আট বছরের বিবাহিত জীবন। তাদের একমাত্র সন্তান মারিয়া। নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় গতকাল রোববার সকালে ৭ বছরের শিশু মারিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। পরে রাকিবুল ইসলাম মুন্না (২৪) নামে ওই যুবককে আটক করে পুলিশ।

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, শিশুটির বাবামা বাইরে থাকায় শিশুটি বাসায় একা থাকত। রোববার সকালেও শিশুটির বাবামা কাজে চলে যান। পরে শিশুটির ফুফু ঘরের দরজা বন্ধ করতে গিয়ে দেখতে পান ঘরের মধ্যে এক ভবঘুরে ছেলেকে। একইসঙ্গে শিশুটির হাতপা বাঁধা এবং পরনের প্যান্ট নেই। পরে ওই শিশুকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি বলেন, গ্রেপ্তার রাকিবুল পুলিশের কাছে স্বীকার করে, চুরি করতে ওই বাসায় ঢুকেছিল। শিশু মারিয়া চিৎকার করায় তাকে গলা টিপে হত্যা করেছে। পুলিশের ধারণা, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এরপর হত্যা করা হয়। তবে ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকার করে রাকিবুল। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি স্পষ্ট হবে। মৌলভী পুকুর পাড় এলাকার একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান তিনি। শিশু মারিয়ার বাবা মো. বাকের রিকশাচালক। মা নাজিয়া আক্তার পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে। নগরীর চান্দগাঁও থানার মৌলভী পুকুরপাড় এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন তারা। মাবাবা কাজে চলে গেলে বাসায় একা থাকে মারিয়া। মাঝেমধ্যে সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়তে যায়।

শিশুর বাবা বাকের জানান, সকাল ৭টার দিকে তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে যান। পরে সোয়া ৯টার দিকে খবর পান মেয়েকে বাসায় মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তিনি জানান, বাসায় গিয়ে মেয়েকে বিছানায় শোয়ানো অবস্থায় পান। তখন প্রতিবেশীরা জানান, শিশুটির হাতপা বাঁধা এবং তার গলায় কালো দাগ ছিল।

তিনি আরও জানান, তার চাচাতো বোন পাশেই থাকেন এবং তিনি শিশুটিকে দেখতে তাদের বাসায় গেলে দরজা বন্ধ পান। পরে প্রতিবেশীদের নিয়ে দরজা খুললে এক যুবক দৌড়ে পালিয়ে যায়।

একমাত্র সন্তান মারিয়া আক্তারকে () এই অবস্থায় দেখে বিলাপ করতে থাকেন মা নাজিয়া আর বলতে থাকেন, বুকের মানিকরে এত কষ্ট দিল কেন? তাকে ছাড়া বাঁচব কীভাবে? তিনি জানালেন, ভাগ্য বদলাতে ১৪ মাস আগে এই শহরে এসেছিলেন তারা। মারিয়া সারাক্ষণ পুরো বাসা মাতিয়ে রাখত।

শিশুটির চাচা মো. জুয়েল বলেন, মাবাবা কাজে চলে গেলে শিশুটি বাসার দরজা খোলা রেখে খেলাধুলা করে। আশেপাশের প্রতিবেশীরা তার খোঁজ নেয়। আজ (গতকাল) বেলা ১১টার দিকে এক প্রতিবেশী ভেতর থেকে দরজা বন্ধ দেখে মারিয়াকে ডাকাডাকি করতে থাকেন। কিন্তু সাড়া না পাওয়ায় তিনি আশেপাশের লোকজনকে ডেকে আনেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভবঘুরে ওই ছেলেটি রেলস্টেশন, ফুটপাতে থাকত। তার বাড়ি কক্সবাজার বলে জানতে পেরেছি। স্থানীয়রা ওই যুবককে ধাওয়া করলে সে পুকুরে ঝাঁপ দেয়। পরে তাকে আটক করে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবন্দরের আয়ের একটি অংশ সিটি কর্পোরেশনের পাওয়া উচিত
পরবর্তী নিবন্ধটেকনাফে অস্ত্রসহ রোহিঙ্গা ডাকাত গ্রেপ্তার