শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের প্রযোজনায় সোজন বাদিয়ার ঘাট’র ২১তম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জসীম উদ্দীন গ্রাম–বাংলার লোক জীবনের নিপুণ ভাষ্যকার। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সুখ–দুঃখ, হাসি–কান্না, প্রেম–বিরহ বিশ্বস্ততার সাথে উঠে আসে তার কাব্যে। তাতে জড়িয়ে থাকে শান্ত–স্নিগ্ধ অনুভূতিমালা। নাগরিক জীবনের যন্ত্র ও যান্ত্রিকতায় যন্ত্রণাদগ্ধ মানুষের জন্য তাই জসীম উদ্দীনের কাব্য স্বস্তির এক পরম নির্ভরতা। ছাঁচি পান খেয়ে ঠোঁট রাঙালে/ তা তখনি মোছে ঠোঁটেরি হাসির ঘায়ে। এইভাবে মুছে যায় মুছে গেছে সোজান–দুলীর অপূর্ণ প্রেমকাহিনী, শুধু গড়াই নদীর ধারে ঢেউয়ের ব্যথার পরশ লাগা এক ঘাটে বেঁচে আছে সেই ব্যথাতুর প্রেমের আখ্যান, জীবন বয়ে চলে। তেমনি কালের পথ ধরে বয়ে চলে অসময়ের থেমে যাওয়া সেই প্রেম কাহিনী। সেই প্রেমময় নামের স্পর্শ লাগা ঘাটের বারি হয়ে ওঠে তীর্থ–সলিল। অন্ধকার আকাশের বুকে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত জেগে থেকে ঘোষণা করে জীবনের বৈচিত্র্যের জয়গান। প্রমা’র প্রযোজনা ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ শুধুমাত্র সোজন–দুলীর প্রেমোপাখ্যান মাত্র নয়। সমকালীন সমাজের এক গভীর সংকট–সাম্প্রদায়িকতার স্বরূপকে এখানে উপস্থাপন করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতা এখানে পরাজিত মানবিক আকাঙ্ক্ষার কাছে। তাছাড়া প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার বিপরীতে সোজন–দুলীর জীবন অনুসন্ধান আমাদের নতুন ভাবনায় উজ্জীবিত করে। বিষয় ও আঙ্গিকের উপযুক্ত চিন্তা থেকে এ প্রযোজনা নির্মাণ করা হয়েছে। সোজন বাদিয়ার ঘাট’র নির্দেশনায় ছিলেন কংকন দাশ, গ্রন্থনায় শর্মিষ্ঠা বড়ুয়া, আলোক পরিকল্পনায় ছিলেন বাপ্পা চৌধুরী।
বিভিন্ন চরিত্রে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হলেন, সুত্রধর : স্বপন দাশ, সোজন : তাজুল ইসলাম, দুলী : লিপি তালুকদার, মা : সাহেলী তাহের, মদন চাচা : এটিএম সাইফুর রহমান, অংশগ্রহণকারী অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ হলেন, কংকন দাশ, ইব্রাহিম খলিল মাসুদ, রুনা চৌধুরী, নাজমুল আলিম সাদেকী সুমন, আচরারুল হক, রাজু দাশগুপ্ত, মাহফুজ আহমেদ, রোমেনা আফাজ রুমি, পার্থ প্রতিম মহাজন, লিটন নন্দী, রূপা সেনগুপ্তা, সুমিষ্টা বড়ুয়া, কলি দাশ, সাফাত জামিল, তপতী মজুমদার, প্রতিমা দাশ, চৈতী কুন্ডু, অর্পিতা বড়ুয়া, ঝুমি বড়ুয়া, সুমনা রহমান, প্রতিভা বড়ুয়া, পাপড়ি নাগ, রেহেনা জান্নাত, পূজা দাশ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।