গাছের শিকড় বৃদ্ধির জন্য মাটি ছাড়াই কেবল পানি, বাতাস, সূর্যের আলো আর পাথর ব্যবহার করে ছাদ বাগান গড়ার ‘হাইড্রোপনিক’ কৃষি ব্যবস্থার একটি মডেল বানিয়েছেন হাজীগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের তিন শিক্ষার্থী। তাদের একজন নিলয় পাল বলেন, শহর এলাকায় চাইলেও মাটির অভাবে গাছ লাগানো সম্ভব হয় না। তাই ছাদ বাগানের জন্য আমরা হাইড্রোপনিক কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি। এখানে মাটির পরিবর্তে গাছের শিকড় বৃদ্ধির জন্য পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। “পাথর আকড়ে বাড়বে শিকড়। সঙ্গে সূর্যের আলো, বাতাস আর সার ব্যবহার করা যাবে। পানি দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে থাকবে ওয়াটার সেন্সর। নির্ধারিত সীমার উপরে গেলেই পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করা গেলে খরচ আরো কমবে।” এই প্রকল্পে নিলয়ের দুই সঙ্গী অর্ক চক্রবর্তী বাবন ও আদিত্য পাল আশাবাদী তাদের এই ব্যবস্থা জনপ্রিয় হবে ছাদ বাগান করার ক্ষেত্রে। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মাঠে এরকম ১১৪টি উদ্ভাবনী প্রকল্প নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন ৩৮টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র–ছাত্রীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তিন শিক্ষার্থী তৈরি করেছেন ‘সাপোর্ট ফর ব্লাইন্ড– স্মার্ট সানগ্লাস’। খবর বিডিনিউজের।
এই চশমায় স্থাপিত আলট্রাসনিক সেন্সর তিন মিটার দূর পর্যন্ত বাধা শনাক্ত করে সংকেত দেবে, যেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি তা সহজেই জানতে পারেন। এতে নির্বিঘ্ন হবে চলাচল। আল মামুন, আবু নাঈম ও মিজানুর রহমান জানান, তাদের এই সানগ্লাস তৈরিতে খরচ হবে এক হাজার ১০০ টাকার মতো। লহ্মীপুর পলটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র আসিফুল মাওলা, আবদুল্যাহ আল মাহবুব জিহাদ ও আল–আমিনের প্রকল্পের নাম ‘এলপিআই লাইফ লাইন’, যা মূলত ডিজিটাল ব্লাড ব্যাংক। আসিফুল মাওলা বলেন, এটা রক্তদাতাদের নেটওয়ার্ক সিস্টেম, জরুরি মুহূর্তে রক্তদাতা ও রক্ত গ্রহিতার মধ্যে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপন করে দিতে পারব আমরা। এতে দাতা ও গ্রহীতার সব তথ্য সুরক্ষিত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের তৈরি করা অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে ছিল– ভূমিকম্প সহনীয় ভবন, কৃষি রোবট, জিওপলিমার সাসটেইনেবল কংক্রিট, কার্বন পিউরিফিকেশন ফ্যাক্টরি, গ্লোভস কমিউনিকেশন সিস্টেম (কথা বলায় বাধাগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য), আধুনিক খামার, ম্যাজিক বার্নার, প্রাকৃতিক উপায়ে শীতলীকরণ, স্মার্ট সেচ, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, পরিবেশ বান্ধব ভবন, গ্রিন বিল্ডিং ভবন, ক্যান্টিলিভার বিম ব্যবহার করে পার্বত্য অঞ্চলের রাস্তা, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই সেচ, লেজার বিম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, হিউম্যান ফলোয়িং রোবট, মাউন্টেন রোড কার্ভে স্মার্ট ওয়ার্নিং সিস্টেম, ফ্লোটিং হাউস, গ্যাস লিকেজ ডিটেক্টর, হাইড্রো ডায়নামিক সিস্টেম ও রোবটিক এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট। কারিগরী শিক্ষার্থীদের মেধা, দক্ষতা ও উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের লক্ষ্যে ‘স্কিলস অ্যান্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন ২০২৫’ এর চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রতিযোগায় এসব প্রকল্প নিয়ে আসেন শিক্ষার্থীরা। এতে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৩৮টি শিক্ষা কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩৪২ জন নির্বাচিত শিক্ষার্থী ১১৪টি উদ্ভাবনী প্রকল্প উপস্থাপন করে।












