শিক্ষা, মানবতা ও উৎপাদন : জাতি গঠনের ভিত্তিপ্রস্তর

মো. মাজহারুল হক | মঙ্গলবার , ২২ এপ্রিল, ২০২৫ at ৫:০৬ পূর্বাহ্ণ

কোনো জাতিকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিতে হলে যে উপাদানটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো শিক্ষা। তবে সে শিক্ষা হতে হবে মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন, উৎপাদনমুখী এবং সৃজনশীলতায় ভরপুর। কেবল মুখস্থ নির্ভরতা বা সার্টিফিকেট অর্জনের জন্য পড়াশোনা একটি জাতিকে সাময়িকভাবে শিক্ষিত হিসেবে পরিচয় দিতে পারে, কিন্তু প্রকৃত উন্নয়নের পথ তৈরি করে না। মানবতা বিবর্জিত পড়াশোনা এক ধরনের অসভ্যতা। যে শিক্ষা মানুষকে সহানুভূতিশীল, নৈতিক এবং দায়িত্ববান করে তোলে না, তা আদর্শ শিক্ষা হতে পারে না। আবার শুধুমাত্র উৎপাদন নির্ভর, পেশাভিত্তিক শিক্ষাযদি সৃষ্টিশীলতার বিকাশ না ঘটায়তাহলে তা জাতি গঠনে দীর্ঘমেয়াদে খুব বেশি অবদান রাখতে পারে না। শিক্ষা হওয়া উচিত এমন, যা মানুষকে চিন্তা করতে শেখায়, নতুন কিছু সৃষ্টি করতে উদ্বুদ্ধ করে এবং সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ তৈরি করে।

বাংলাদেশ একটি ভৌগোলিকভাবে ছোট দেশ হলেও এর জনসংখ্যা অত্যন্ত বেশি। তবে এই অধিক জনসংখ্যা কোনো অভিশাপ নয়, বরং একটি সম্ভাবনাযদি আমরা তা জনশক্তিতে রূপান্তর করতে পারি। এর জন্য প্রয়োজন দক্ষ, সৃজনশীল ও মানবিক গুণসম্পন্ন নাগরিক তৈরি করা, যারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। সঠিক পরিকল্পনা, আধুনিক কারিগরি শিক্ষা, উদ্যোক্তা সৃষ্টির সুযোগ এবং মানবিক চেতনার প্রসার ঘটিয়ে এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে আমরা জাতির সম্পদে রূপান্তর করতে পারি।

অতএব, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে তা শুধু চাকরি পাওয়ার মাধ্যম না হয়ে, দেশ গঠনের হাতিয়ার হয়ে ওঠে। মানবিক মূল্যবোধ, সৃজনশীলতা ও উৎপাদন সক্ষমতাএই তিনের সমন্বয়ে একটি জাতি সত্যিকার অর্থে উন্নত, সভ্য এবং স্বনির্ভর হতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলী খেলা
পরবর্তী নিবন্ধঅভীক ওসমানের ‘আমি অকৃতী অধম’