শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে খোলার ভাবনা

| বৃহস্পতিবার , ১২ নভেম্বর, ২০২০ at ৫:০৩ পূর্বাহ্ণ

করোনা মহামারীর মধ্যে আগামী ১৪ নভেম্বরের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া যায় কি না, তা ভাবছে সরকার। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির কথায় এই আভাস মিলেছে। তবে কবে থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি খুলে দেওয়া যাবে, তা এখনও অনিশ্চিত। শিক্ষা বিষয়ক প্রতিবেদকদের একাংশের সংগঠন ‘বাংলাদেশ এডুকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম’ এর অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের জরিপের ফল নিয়ে বুধবার এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি একথা জানান। খবর বিডিনিউজের।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা এ মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছি। ১৫ তারিখ থেকে খুলবে কি না, নাকি এই ছুটি আরও বাড়বে, নাকি কোনো কোনো ক্লাসের জন্য আমরা সীমিত আকারে শুরু করতে পারব-এই সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে এখনও কাজ করছি।
তিনি বলেন, ১৪ তারিখের আগে চেষ্টা করব আপনাদের (গণমাধ্যম) জানিয়ে দিতে। কারণ ১৪ তারিখের আগে আমাদের একটা সিদ্ধান্ত দিতেই হবে। কাল বা পরশুর মধ্যে আমাদের একটা সিদ্ধান্ত জানাতেই হবে।
করোনার প্রকোপ বাড়ার পর গত ১৭ মার্চ থেকে বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। কওমি মাদ্রাসা বাদে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা আছে। মহামারীর কারণে এবার বার্ষিক পরীক্ষাও হচ্ছে না।
আগামী বছরের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে সীমিত পরিসরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হতে পারে বলে আগেই আভাস দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
দীপু মনি বলেন, সংকটের মধ্যেও আমরা পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। অবশ্যই এটি কোনো আদর্শ পরিস্থিতি নয়। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তার মধ্যে আমরা চেষ্টা করছি। এই চেষ্টাটি চালিয়ে যেতে হবে। কারণ করোনা কতদিনে যাবে, কতদিনে সত্যিকার অর্থে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পুরোপুরি খুলে দিতে পারব, সে বিষয়গুলো কিন্তু এখনও অনিশ্চিত।
তিনি বলেন, সামনে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আছে। সেগুলো নিয়েও আমরা বিভিন্নভাবে ভাবছি। পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীরা সিলেবাস কি করে পুরোপুরি শেষ করতে পারে, এসব নানান জিনিস আমরা ভাবছি।
করোনা মহামারীর মধ্যে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে চট্টগ্রামের ৪৯৬ জন, ঢাকার ৩৯৫ জন, বরিশালের ২০ জন, খুলনার ২৬ জন, ময়মনসিংহের ২৯ জন, রাজশাহীর ৮৫ জন, রংপুরের ৬৭ এবং সিলেট বিভাগের আট জন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নির্ধারিত প্রশ্নের মাধ্যমে উত্তর সংগ্রহ করে বাংলাদেশ এডুকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম। এরপর গণস্বাক্ষরতা অভিযান তাদের সেই তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাধ্যমিকে ৪২ শতাংশ এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ৫৮ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রমে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে। আর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক মিলে নিয়মিত অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে ৬৩ শতাংশ। ভিডিও মাধ্যমে শিক্ষা নিয়েছে ৬১ শতাংশ। ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে শিক্ষা নিচ্ছে ৩৫ শতাংশ। অন্য মাধ্যমে (ইমেইল, হোয়াটসআ্যাপ, ভাইবার ইত্যাদি) শিক্ষা নিচ্ছে ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী।
জরিপের তথ্যানুযায়ী, ইন্টারনেট ব্যয় ৫০১ টাকা থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে ৫৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর। আর ইন্টারনেট ব্যয় ৭০ টাকা থেকে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে ১০ শতাংশ শিক্ষার্থীর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঘরের চাল থেকে কবুতর নামাতে গিয়ে প্রাণ গেল স্কুল শিক্ষার্থীর
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে শনাক্ত আরো ১০৭