শিক্ষা কিনে নেওয়ার পণ্য নয় এটিকে গ্রহণ করতে হয়

সাক্ষরতা দিবসে রোটারি ক্লাবের সেমিনারে এম এ মালেক

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:২২ পূর্বাহ্ণ

একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, শিক্ষাকে কেনা যায় না। এটি পণ্য নয়। শিক্ষাকে গ্রহণ করতে হয়। বিশ্ব সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে রোটারি আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে ‘সমাজ উন্নয়নে শিক্ষা ও সাক্ষরতার গুরুত্ব : রোটারির ভূমিকা’ শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
রোটারি ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর রুহেলা খান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এফ এম ইমাম আলী। চিফ সেশন স্পিকার ছিলেন অধ্যাপক ডা. ইমরান বিন ইউনুস, সেশন স্পিকার ছিলেন ঘাসফুলের চেয়ারম্যান ড. মঞ্জুর উল আমিন চৌধুরী। আলোচক ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক ড. সফিকুল ইসলাম ও প্রাক্তন জেলা গভর্নর আবদুল আহাদ। ইভেন্ট চেয়ার মুবিনুল হক মুবিনের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন মো. মতিউর রহমান, জেলা সচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট ট্রেইনার সামিনা ইসলাম, চিফ সার্জেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আমজাদ হোসেন, জোনাল কো-অর্ডিনেটর এমদাদুল আজিজ চৌধুরী, আমজাদ হোসেন, মো. মুজিবর রহমান ও আয়োজক রোটারি ক্লাব অব চিটাগং আপ টাউনের সভাপতি আমরান মিয়া।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক আরও বলেন, পৃথিবীতে আমরা যেন মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাই। সেটিই হোক বড় চাওয়া। সত্যজিত রায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, জানার কোন শেষ নেই। জানার চেষ্টা বৃথা যায় না। এ ধরনের সেমিনার আয়োজন করায় রোটারিকে ধন্যবাদ জানান তিনি। বক্তব্যে রোটারি ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর রুহেলা খান চৌধুরী বলেন, দেশ যখন পোলিও মুক্ত হয়েছে, নিরক্ষরতাও দূর করা যাবে। এই নিরক্ষরতা দূর করতে রোটারিয়ানরা কিভাবে কাজ করতে পারে, আমরা সেটি দেখছি। বিশেষ করে বয়স্কদের সাক্ষরতার আওতায় আনতে এডাল্ট লিটারেসি নিয়ে আরো বেশি কাজ করা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। রোটারি ক্লাবগুলোর মধ্যে যারা এডাল্ট লিটারেসি নিয়ে কাজ করবে-তাদের পুরস্কৃত করার ঘোষণাও দেন ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর রুহেলা খান চৌধুরী।
পিডিজি আবদুল আহাদ তার বক্তব্যে বলেন, আমরা রোটারিয়ানরা লিটারেসিকে খুব বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কিন্তু সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এডাল্টদের (বয়স্কদের) লিটারেসির আওতায় আনা। যেখানে যা করা দরকার, সেখানে সেটিই করে রোটারি। ঘাসফুলের চেয়ারম্যান ড. মঞ্জুর উল আমিন বলেন, সাক্ষরতা এবং শিক্ষা আমার অধিকার। এসডিজি’র চার নম্বরে রাখা হয়েছে কোয়ালিটি এডুকেশন। শিক্ষা পণ্য নয়। কিন্তু আমরা এটিকে পণ্য বানিয়ে ফেলেছি। দেশের সাক্ষরতার বর্তমান হার প্রায় ৭৫ শতাংশ। অর্থাৎ স্বাধীনতার ৫০ বছরেও ২৫ শতাংশ মানুষ সাক্ষরবিহীন রয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে সরকার-রাস্ট্রের ভাবা উচিত। সমাজে সমতা নেই, বৈষম্যময়। দিন দিন এ বৈষম্য বাড়ছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ-পরিচালক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, পৃথিবী বদলে যাচ্ছে। সময় পরিবর্তন হচ্ছে। সবাইকে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে হচ্ছে। যারা মানিয়ে নিতে পারবেনা-তারা টিকতে পারবেনা। টিকে থাকতে যা যা জানা দরকার বা করা দরকার, সেসব জানা বা করতে পারাটাই এখন লিটারেসি। পথ শিশুদের নিয়ে কিছু করতে রোটারিয়ানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅর্থনীতিবিদ আকবর আলি খানের ইন্তেকাল
পরবর্তী নিবন্ধচট্টলদরদী মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরীর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ