শিক্ষা উপমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পর অবরোধ স্থগিত

চবি ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের প্রতিনিধি দল যাবে কেন্দ্রে

চবি প্রতিনিধি | বুধবার , ৩ আগস্ট, ২০২২ at ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের অনির্দিষ্টকালের আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। দুদিন পর গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টায় অবরোধ স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে খুলে দেওয়া হয় চবির মূল ফটক। আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধি দল কেন্দ্রে গিয়ে দাবি তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন তারা। এর আগে গতকাল বেলা ১১টার দিকে ফেইসবুক পোস্টে আন্দোলনরত পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তার হুঁশিয়ারির পর আন্দোলন স্থগিত করেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। আন্দোলনকারীরা জানান, তাদের একটি প্রতিনিধি দল কেন্দ্রে দাবিগুলো পেশ করবেন।

এদিকে গতকাল সকাল থেকে কোনো ট্রেন ক্যাম্পাসে আসেনি। ছেড়ে যায়নি শিক্ষক বাস। গতকালও অনেক বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত ছিল। অর্ধবেলা অবরোধ থাকলেও কার্যত পুরোদিন অচল ছিল ক্যাম্পাস। এর আগে গত রোববার রাতে চবি শাখা ছাত্রলীগের ৪২৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপর থেকে ক্যাম্পাসের মূল ফটকে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন পদবঞ্চিতরা। আন্দোলনের কারণে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন চলাচল ও অধিকাংশ বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ছিল। গত সোমবার সংবাদ সম্মেলনে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা ৫ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো, সদ্য ঘোষিত কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হওয়া মো. ইলিয়াসকে অছাত্র, ইয়াবা ব্যবসায়ী ও টেন্ডারবাজ আখ্যায়িত করে আজীবন ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা; পূর্ণাঙ্গ কমিটি বর্ধিত করা; সকল অছাত্র, জামায়াত-বিএনপি ও বিবাহিতদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া; ৫০ জন ত্যাগী, মেধাবী ও নিয়মিত ছাত্রকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা এবং পদবিতে সিনিয়র-জুনিয়র ক্রম বজায় রাখা।

গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ৩৭৬ সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এতে সংগঠনটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সই রয়েছে। কমিটি ঘোষণার পরপরই বিক্ষোভ শুরু করেন পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

ছাত্রলীগের একাংশের অবরোধে টানা দুদিন অচল ছিল চবি। এ ঘটনায় প্রশাসনকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। তবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেছেন, শিক্ষার্থীরা যেহেতু আন্দোলন করছে, হার্ডলাইনে গেলে পরিস্থিতি অন্যদিকে চলে যায়। এজন্য অসীম ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় অসুবিধায় পড়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। গতকাল দুপুরে উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, একটা সংগঠনের কমিটিতে কে আসবে, কে আসবে না, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো হাত নেই। তারপরও আমরা যোগাযোগ করেছি সব পক্ষের সঙ্গে। এজন্যই আন্দোলন প্রত্যাহার হয়েছে। তিনি বলেন, শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে অতীতেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। এ ধরনের কাজে জড়িত থাকলে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিটি কলেজ ছাত্রসংসদের কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট
পরবর্তী নিবন্ধফুল আনতে গিয়ে ফিরল লাশ হয়ে