পৃথিবীতে যে, যত মহৎ হোক না কেন, সে কোন না কোন শিক্ষকের অধীনে জ্ঞান অর্জন করেছে। এবং যতগুলো সম্মানজনক পেশা আছে তার মধ্যে শিক্ষকতা পেশা হলো ‘চিন্তাশীল এবং সৃজনশীল সর্বোচ্চ সম্মানিত পেশা’। সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশেও শিক্ষকতা পেশা একটি সম্মানজনক পেশা হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত।
১৯৬৬ সালে জাতিসংঘের- শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর উদ্যোগে প্যারিসে শিক্ষকদের অধিকার, মর্যাদা ও করণীয় সম্পর্কে গৃহীত এবং পরে ILO কর্তৃক অনুমোদিত সুপারিশগুলো চিরস্মরণীয় করে রাখতে- ‘৫ অক্টোবর’ বিশ্ব শিক্ষক দিবস,’ পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ১৯৯৩ সালে বিশ্বের ১৬৭টি দেশের ২১০টি জাতীয় সংগঠন প্রায় ৩ কোটি ২০ লক্ষ সদস্যের প্রতিনিধিত্বকারী আন্তর্জাতিক শিক্ষক সংগঠন Education International (EI) গঠিত হয়। এ আন্তর্জাতিক সংগঠন জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলো কর্তৃক প্রণীত দলিলটি যথাযথ বাস্তবায়ন করা এবং অর্থবহ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ক্রমাগত অনুরোধ ও আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে -১৯৯৪ সালে ‘ইউনেস্কোর ২৬তম অধিবেশনে গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ‘৫ অক্টোবর বিশ্বশিক্ষক দিবস’ পালনের শুভসূচনা করা হয়। এখন ‘বিশ্বশিক্ষক দিবসটি’ ইউনিসেফ, ইউএনডিপি, ILO এবং শিক্ষা আন্তর্জাতিক এর অংশীদারত্বে মিশে গেছে। শিক্ষকদের মর্যাদাসনদ হিসেবে ইউনেস্কো ILO সুপারিশ করা বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে-
১. শিক্ষাকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হিসেবে স্বীকার করতে হবে। ২. একতরফা সিদ্ধান্ত দ্বারা শিক্ষকদের পেশা, জীবন ও অবস্থান যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ৩. পেশাগত অসদাচরণের জন্য কোন শিক্ষকের ক্ষেত্রে “শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রযোজ্য বলে বিবেচিত হলে অসদাচরণ এর সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট বিষয় উল্লেখ নিশ্চিত করতে হবে। ৪. পেশাগত দায়িত্বপালনে শিক্ষকদের পর্যাপ্ত স্বাধীনতা থাকতে হবে। ৫. শিক্ষক এবং সংগঠনগুলো যৌথভাবে ‘নতুন শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক, শিক্ষা উপকরণের উন্নয়ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। ৬. শিক্ষকদের বেতন, এমন হওয়া উচিত যা সমাজে শিক্ষকতা পেশার গুরুত্ব ও মর্যাদা তুলে ধরে। এই সুপারিশগুলোতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি স্বাক্ষর করেছেন।
শিক্ষা যদি জাতির মেরুদণ্ড হয় তবে শিক্ষকেরা সেই মেরুদণ্ডের স্রষ্টা। নৈতিক বিচারে শিক্ষকদের চেয়ে সম্মানিত এবং শিক্ষকতার চেয়ে মর্যাদা পূর্ণ পেশা আরেকটিও নেই। শিক্ষা ব্যক্তির অন্তর্নিহিত সত্তাকে জাগ্রত, বিকশিত ও শানিত করে। শিক্ষার প্রকৃত লক্ষ্য হচ্ছে-” মানবিক গুণাবলির উৎকর্ষ সাধন, গণতান্ত্রিক চেতনা ও দেশাত্মবোধ সম্পন্ন উন্নত জীবন উপযোগী সুনাগরিক গড়ে তোলা। সুতরাং উন্নত ও মর্যাদাশীল জাতি গঠনে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। আমাদের দেশের বিভিন্ন সংকটময় মুহূর্তে শিক্ষকসমাজ তথা প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, জাতিকে দিক নির্দেশনামূলক নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। যেমন, ‘১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে’, ‘৬২এর শিক্ষা আন্দোলন’, ‘৬৬ এর ছয়দফা আন্দোলন’, ‘৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান’, ‘৭০ এর নির্বাচন’ এবং সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে ও নেতৃত্ব দিয়ে শিক্ষকেরা অসামান্য অবদান রেখেছেন।
বর্তমানে ‘কোভিড -১৯’ এর কারণে আমাদের স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, কারিগরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে নিরাপদে থাকতে পারে সেজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদেরকে ভাইরাস সংক্রমণ থেকে মুক্ত রাখার জন্য শিক্ষকেরা যথাযথ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে- টিভি, রেডিও, মোবাইল ফোন,অনলাইন,ইন্টারনেট প্লাটফর্ম ,জ্যুম ইত্যাদি ব্যবহার করে দূরবর্তী শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বৈশ্বিক মহামারীর বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য শিক্ষকেরা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে -জ্ঞান বিনিময় ও সক্ষমতা তৈরীর মাধ্যমে ভবিষ্যত মহামারী কিভাবে মোকাবেলা করা যাবে সে সম্পর্কে শিক্ষার্থী ছাড়াও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে সচেতন করছেন।
বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে এবং “শিক্ষকতা পেশায়” যারা আছেন তাদের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা বিদ্যমান। যেমন বর্তমানে প্রাথমিক স্তরে ১১ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ;এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক কলেজ পর্যায়ে ৪ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বেড়েছে বিভিন্ন প্রণালীর শিক্ষাব্যবস্থা-যেমন বাংলা মাধ্যম,ইংরেজি ভার্সন, এ লেভেল,ও লেভেল, সাধারণ মাদ্রাসা ও কওমী মাদ্রাসা ইত্যাদি। অন্যদিকে বর্তমানে সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে প্রায় ১৪৫টির মত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা-কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর সংগে আছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, আরবী বিশ্ববিদ্যালয় এবং এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্তরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
কিন্তু এ বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে উপযুক্ত শিক্ষা দেয়ার মত যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক আমরা তৈরী করতে পারিনি। ফলে শিক্ষাব্যবস্থার নীচের দিকে শিক্ষাদানের কাজটা যথাযথভাবে হচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীরা না বাংলায়, না ইংরেজিতে, প্রত্যাশিত দক্ষতা অর্জন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। সরকারি, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বাংলা,ইংরেজি ও আরবি মাধ্যমে-প্রাথমিক,মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা ইত্যাদি বিভিন্ন স্তরে যে শিক্ষার প্রচলন রয়েছে, তার ৯০ শতাংশ শিক্ষা এখনো বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে। এ শিক্ষা সেক্টরের দশ লক্ষাধিক শিক্ষক কর্মচারী কর্মরত আছেন। এদের মধ্যে পাচঁ লক্ষাধিক শিক্ষক কর্মচারী এমপিওভুক্ত হলেও এখনো বিরাট একটি অংশ এমপিওভূক্ত নয়। সাড়ে সাত হাজার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন সময়ে সরকার একাডেমিক স্বীকৃতি দিলেও তাদেরকে এমপিওভুক্ত করা হচ্ছেনা। ফলে শিক্ষায় দিন দিন সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষক দেওয়া হচ্ছেনা। অতিরিক্ত শ্রেণিশিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা হচ্ছেনা। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মূলবেতন এর শতভাগ পেলেও এখনো ১০০০ টাকা বাড়িভাড়া,৫০০ টাকা চিকিৎসাভাতা; শিক্ষকরা ২৫% এবং কর্মচারীরা ৫০% উৎসবভাতা পান। এ ভাতা আর বৃদ্ধি করা হচ্ছে না। পদোন্নতিতে রয়েছে সমস্যা। ১৯৯৫ সালের কুখ্যাত জনবল কাঠামোর কারণে কলেজের শিক্ষকেরা সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাচ্ছেন না। আগে ৮ বছর পর একটি সিলেকশন গ্রেড পেতেন; এখন সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ জনবল কাঠামো অনুযায়ী ১২ বছরের ও ১৬ বছরের সিলেকশন গ্রেড নির্ধারণ করা হয়েছে। যা শিক্ষকদের জন্য খুবই অপমানজনক ও অসম্মানজনক। পদোন্নতি না দিয়ে শিক্ষকদেরকে পদ অবনতি করা হয়েছে। এটা শিক্ষক সমাজের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কলেজের শিক্ষকদের ক্ষেত্রে জনবল কাঠামোর (৫ঃ২ অর্থাৎ ৭জনে ২জন) কারণে একজন ২৫ বছর চাকরি করে প্রভাষক থাকেন, আবার প্রভাষক থেকে কেউ কেউ অবসর নেন। অন্যদিকে তারই ছাত্র নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানে সহকারী অধ্যাপক হচ্ছেন। কিন্তু আগের জনবল কাঠামোতে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদ সৃষ্টির কথা উল্লেখ ছিল যা ২০১৮ তে এসে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে- তা ও খুব দুঃখজনক। আবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজগুলোতে নতুন করে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বেসরকারি কলেজগুলোতে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকেরা সরকার নিবন্ধিত নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলেজে নিয়োগ পরীক্ষায় যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পরও তারা দীর্ঘদিন যাবৎ জনবল কাঠামোর কারণে সরকারি অনুদান বা এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। এর ফলে তারা লেখাপড়া ও শ্রেণিকার্যক্রম বাদ দিয়ে এমপিওভুক্ত হওয়ার জন্য অর্থাৎ জীবন জীবিকার জন্য রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে ব্যস্ত আছেন। ফলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে দেশ বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। শিক্ষকেরা সরকার নির্ধারিত নিবন্ধন পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জন করে,স্কুল বা কলেজের নিয়োগ কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জন করার পর স্কুল বা কলেজে শিক্ষক ও প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। কিন্তু এসমস্ত নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা কোনো ধরনের সরকারি টাকা বা এমপিও পান না। এটা শিক্ষকদের সাথে একধরণের হটকারিতা এবং এটা আমাদের দেশের শিক্ষা ও শিক্ষকদের ক্ষেত্রে বিরাট সংকট এবং মর্যাদার ক্ষেত্রে বিরাট বৈষম্য। যা শিক্ষানীতি এবং আমাদের সংবিধান ও ইউনেস্কো, ILO ঘোষিত নীতিমালার সাথে সাংঘর্ষিক। এই অবস্থা শিক্ষকদের জন্য কাম্য হতে পারেনা।
বাংলাদেশ এ পর্যন্ত যত সরকার এসেছে তারা এক বা একাধিক ‘শিক্ষা কমিশন’ গঠন করেছেন। সেই কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করার আগেই সরকার বিদায় নিয়েছেন। ২০১০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণার পর ১০ বছর বর্তমান সরকার সময় পেয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো এই দীর্ঘ সময় সরকার শিক্ষানীতির মৌলিক কোনো ধারাই বাস্তবায়ন করেননি। কাঠামোগত সংস্কার হয়নি; স্থায়ী কোনো শিক্ষাকমিশন হয়নি; নীতি বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষা আইন হয়নি। সরকার নতুন করে আবার শিক্ষানীতি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছেন। আসলে শিক্ষা নিয়ে কাজের চেয়ে কথাই বেশি হচ্ছে। এই অবস্থা শিক্ষকদের জন্য কাম্য হতে পারে না।
বর্তমান সরকার শিক্ষার উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে- ‘শিক্ষানীতি ২০১০’ প্রণয়ন করেছেন। ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারশতাধিক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও তিনশতাধিক বেসরকারি কলেজকে সরকারিকরণ করেছেন। দেশের শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন স্থানে নতুন করে মডেল স্কুল এন্ড কলেজ ও সৃষ্টি করেছেন। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষদের জন্য ২০% বৈশাখীভাতা ও ৫% বার্ষিক প্রবৃদ্ধি প্রদান করেছেন। শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বই, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জন্য কল্যাণট্রাস্ট ও অবসরভাতা বোর্ডে বিশেষ ভাতা বরাদ্দ করেছেন। শিক্ষাক্ষেত্রে আধুনিকীকরণে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এ ডিজিটাল ল্যাব,অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছেন যা উল্লেখযোগ্য।
সরকারের শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান সত্ত্বেও সরকারি বেসরকারি শিক্ষায় এখনো বিশাল ব্যবধান বিদ্যমান। মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য প্রয়োজন মানসম্মত শিক্ষক। মানসম্মত শিক্ষক পেতে হলে শিক্ষকদের আর্থিক সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি, চাকরির নিশ্চয়তা, অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা কমিটিতে (গভর্নিং বডি) বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় প্রভাবশালী ও দুর্বৃত্তদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করায় শিক্ষকেরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন- এসব সমস্যা সমাধান করতে হবে। উপরোক্ত বৈষম্য ও সমস্যা দূর করতে না পারলে শিক্ষাক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন(২০৩০ কর্মসূচি অর্জনের চাবিকাঠি হিসেবে স্বীকৃত এসডিসি.৪.সি)সহসা সম্ভব নয়। দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমতা রক্ষাকারী সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্ব যেমন সরকার গ্রহণ করেছেন তেমনি ‘শিক্ষা ও মানুষের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার’- এর দায়-দায়িত্ব সরকারকে গ্রহণ করতে হবে। সরকার যদি পুরো শিক্ষাব্যবস্থার দায়িত্ব নিয়ে ফেলে অর্থাৎ ‘শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ’ করেন তাহলে শিক্ষা ও শিক্ষকদের মান মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের কেউ- শিক্ষকতা পেশাকে’ শুধু চাকরি মনে না করে- দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে- ‘শিক্ষকতার মহান পেশার মর্যাদাকে সর্বপ্রথমে স্থান দিতে হবে। শিক্ষকদের প্রত্যাশা মান মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকা। তাই শিক্ষকদের পেশাগত স্বীকৃতি, সম্মানজনক বেতনভাতা, বেসরকারি শিক্ষকদেরকে অবসর ও কল্যাণট্রাস্টের পরিবর্তে পেনশনের ব্যবস্থা ও কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকদের পর্যাপ্ত ক্ষমতায়ন নিশ্চিতসহ শিক্ষক সংকট দূর করে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাত গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে আনতে হবে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, নাজিরহাট কলেজ।