শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা আর না খোলার এই ব্যাপারটা আজ আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের ৯০% মানুষ চিন্তা করে যেখানে বড় বড় প্রতিষ্ঠান, মার্কেট শপিংমল এবং রেস্টুরেন্ট সহ সমস্ত কিছুই খোলা, সবকিছু বন্ধ রাখলে দেশের অর্থনীতি অচল হয়ে পড়বে, তেমনি দীর্ঘ সময় নিয়মতান্ত্রিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে ছাত্রছাত্রীরা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এখন দেশের যে অবস্থা একটু স্বাভাবিক হলে বাচ্চাদের স্কুল-কোচিং খোলা যেতে পারে। বাচ্চারা ঘরে বসেও পড়তে পারে। তাছাড়া সব বাচ্চারা কোচিংয়ে যায় না। বাচ্চারা অবুঝ, কোমলমতি। তাদের ভালো দিকটা প্রাধান্য দিতে হবে। কোভিড কী ভয়ংকর তাদের ছোট্ট মন তা বুঝেনা। কোচিং এর তুলনায় স্কুল কলেজে স্টুডেন্ট বেশি। বর্তমানে অনলাইনে ক্লাস যেভাবে চলছে সেটাই বা কয়জনে করছে। কতটুকু শিক্ষাসম্পূর্ণ হচ্ছে তা দেখার বিষয়।
বরং ছোট ছোট বাচ্চারা মোবাইলের বিভিন্ন বিষয়ে আসক্ত হচ্ছে। তা সর্বক্ষেত্রেই ক্ষতিকারক। সবদিক দিয়ে বিবেচনা করে সপ্তাহে তিনদিন ক্লাস করে সিলেবাস কমিয়ে পরীক্ষাগুলো নেয়া উচিত। প্রাইমারি লেভেলের বাচ্চাদের সচেতন করতে শিক্ষকদের ক্ষেত্রে কষ্টকর। তবুও দূরত্ব বজায় রেখে নবম শ্রেণী থেকে উপরের সব ক্লাস-কলেজ স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেয়া যেতে পারে। কারণ এরা অনেকটা নিজেদের সচেতন রাখার বয়সে পৌঁছে গেছে। অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীদের সোনালি ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে। এরা হতাশ, এরা ডিপ্রেশনে ভুগছে। ছাত্রসমাজের একটা ক্ষুদ্র অংশ দরিদ্র। অনেকে এস.এস.সি পাশ করে অন্তত কোনো না কোনো চাকরি সংস্থানে যোগদান করার স্বপ্ন দেখতো। এদের সেই স্বপ্ন ভেঙে যাচ্ছে কোভিড এর কারণে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি এইভাবে বন্ধ থাকে তবে দেশে শিক্ষার হার বহুলাংশ কমে যাবে। এই ক্ষতিপূরণ সরকার কিভাবে করবে? তাছাড়া কলেজ ভার্সিটির ছেলেমেয়েরা হতাশা,একঘেঁয়েমিতা, খিটখিটে মেজাজ, অসামাজিকতা, উগ্র আচারণসহ প্রায় সবকিছুতে অনাগ্রহ হয়ে উঠছে। হয়তো দেখা গেল কোভিড পুরোপুরি নির্মূল হবেই না। এজন্য কি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিরদিনের জন্য বন্ধই থাকবে! সম্ভাবনাময় শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা বেকার থাকলে ধ্বংস হবে তাদের আলোকিত জীবন। মাদক সেবন ও বিভিন্ন মন্দ কাজে জড়িয়ে পড়বে। তবুও যাতে মন্দ কাজে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে আইন শৃঙ্খলাবাহিনি সু-নজর দিবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সচেতন রেখে প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর মানসিক বিপর্যয়ের কথা বিবেচনা করে, স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়টি পর্যালোচনা করে সরকার একটি কার্যকর পদ্ধতির মধ্য দিয়ে হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথাসময়ে পরীক্ষা নেয়া হোক। আমরা চাই সবাই হতাশ জীবন কাটিয়ে আলোর পথ দেখুক, সুস্থ থাকুক, সুন্দর থাকুক আমাদের সন্তানরা।