শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন রক্ষায় ছাত্র–শিক্ষক–অভিভাবককে সমন্বয়ে কাজ করতে হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম ১৪ দল নেতৃবৃন্দ। গতকাল শনিবার বিকেলে দারুল ফজল মার্কেটস্থ নগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি এবং বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় এ মত প্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ।
১৪ দল নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাস ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মেট্রোরেল স্টেশন, বিটিভি ও সেতুভবন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নাশকতা চালায় দুর্বৃত্তরা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃত করা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রমাগত উত্তেজনা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে এ আন্দোলনে উসকানি প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে যারা রুখে দিতে চায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তবে সরকারের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার উদ্যোগের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন রক্ষায় ত্বরিত কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলে মত প্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে একাদশ শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক, আলিম ও সমমানের বাকী পরীক্ষাসমূহ সম্পন্ন করা। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে শিক্ষকদের সহযোগিতা কামনা করেন নেতৃবৃন্দ। এছাড়া ছাত্র–শিক্ষক–অভিভাবকদের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির উপরও গুরুত্বারোপ করেন নেতৃবৃন্দ। তাছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা নাশকতা করবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
শিক্ষক নেতৃবৃন্দ চলমান সংকট থেকে উত্তরণে খোলামেলা আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করায় ১৪ দলকে ধন্যবাদ জানান। নেতৃবৃন্দ কোটা আন্দোলনের নামে যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে তাদের প্রতি চরম ক্ষোভ এবং নিন্দা জ্ঞাপন করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, যেকোন মূল্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে হবে। শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ১৪ দলের নেতৃবৃন্দের সাথে সহমত পোষণ করে একাদশ শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক, আলিম ও সমমানের বাকী পরীক্ষাসমূহ সম্পন্ন করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। সভা চলাকালে ১৪ দলের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজন মোবাইলে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সাথে কথা বলেন এবং শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় করার বিষয়ে অবহিত করেন। শিক্ষামন্ত্রী দেশের সংকটময় মুহুর্তে শিক্ষকগণ যে সহানুভূতি দেখিয়েছে সেজন্য সকলের প্রতি ধন্যবাদ জানান।
খোরশেদ আলম সুজনের সভাপতিত্বে এ সময় ১৪ দলের অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা শফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেলায়েত হোসেন, গণআজাদী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মাও. নজরুল ইসলাম আশরাফী, সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম, সাম্যবাদী দল মহানগর আহ্বায়ক অমূল্য বড়ুয়া, তরীকত ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর আহ্বায়ক কাজী আহসানুল মোর্শেদ কাদেরী, জাসদ নেতা জাফরুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা হেলাল। শিক্ষক নেতৃবৃন্দের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মো. আবু তাহের চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি সমীর কান্তি দাশ, সাধারণ সম্পাদক মো. জসীম উদ্দিন, মহানগর শাখার সভাপতি আনম সরওয়ার আলম, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিকী, শ্যামল কান্তি মজুমদার, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম অঞ্চল সভাপতি সৈয়দ লতিকুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অঞ্চল চৌধুরী, শিমুল মহাজন, দক্ষিণ জেলা সভাপতি মো. ওসমান গনি, সাধারণ সম্পাদক তাপস চক্রবর্তী প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।