শিক্ষায় কেউ দৃষ্টি দিচ্ছে না,কথাও বলছে না : ফখরুল

কেন ‘নির্বাচন নির্বাচন’ করেন, জানালেন

| বুধবার , ২২ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৬:৪১ পূর্বাহ্ণ

দেশের বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা, মান ও পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘উন্মাদনা’ চলছে শিক্ষার ক্ষেত্রে, পরিবর্তনের কোনো চেষ্টা করা হচ্ছে না।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে ‘গ্রন্থ আড্ডা’র অনুষ্ঠানে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বর্তমান চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট কালকে বেরিয়েছে। এতগুলো ছেলেমেয়ে পরীক্ষা দিয়েছে তার মধ্যে মনে হয় সাড়ে পাঁচ হাজার ভর্তির সুযোগ পেয়েছে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজগুলোতে। বাকিরা কী করবে? সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, হাইস্কুলে লটারি করে ভর্তি হয়। আমি একটা উদাহরণ দিচ্ছি, ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুল সেখানে লটারি করে ঠাকুরগাঁওয়ের ছেলেরা পরীক্ষা দিয়েছে। ক্লাস থ্রিতে যে ছেলেটা ভর্তি হবে তাকে যেতে হচ্ছে গাইবান্ধা স্কুলে। খবর বিডিনিউজের।

এমন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কী লাভ এটাতে, কী তৈরি হচ্ছে আমি কিচ্ছু বুঝতে পারি না। এই যে একটা আমি বলব যে, উন্মাদনা চলছে শিক্ষার ক্ষেত্রে। এটার ব্যাপারে কেউ দৃষ্টিও দিচ্ছে না, কথাও বলছে না, বিষয়গুলো পরিবর্তন করার জন্য কোনো চেষ্টা করা হচ্ছে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের অনেক সমস্যা তার মধ্যে লেখাপড়াটা একেবারে শেষ হয়ে গেছে। শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থা এটা একদম শেষ। এটার মধ্যে কিছু অবশিষ্ট আছে বলে আমার মনে হয় না। আপনি প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করেন একেবারে ইউনির্ভাসিটি, সব জায়গায় দেখবেন যে এত নিচু চলে গেছে তার মান তা বলে বোঝানো না। উদাহরণ টেনে সাবেক শিক্ষক ফখরুল বলেন, একেবারে কুড়িগ্রামের রৌমারী চরের সেই প্রাইমারি স্কুলে সেখানে কী শিক্ষা পাচ্ছে, কী সুবিধা পাচ্ছে সেটা কিন্তু আমরা একেবারেই জানি না। অসংখ্য স্কুল তৈরি হয়েছে বিভিন্ন এমপিওভুক্তি করে, অনেক কলেজ তৈরি হয়েছে উইথ অনার্স অ্যান্ড মাস্টার্স যেখানে আপনার কোনো শিক্ষক নেই সেখানেও অনার্স খুলে বসে আছে। সারাদেশে অসংখ্য শিক্ষিত বেকার এটা বড় সমস্যা এটা নিয়ে কেউ চিন্তা করছি না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে এই সরকার অনেকগুলো সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন কিন্তু শিক্ষা বিষয়ক কোনো সংস্কার কমিশন হয় নাই। যেটা আপনার আগে প্রয়োজন ছিল, যেটা আগে দরকার ছিল বলে আমি মনে করি। গোটা সমস্যার মূলে ওই জায়গাটা। আমার যদি শিক্ষাটা ঠিক না হয়, পরিকল্পনা যদি আমার না থাকে তা হলে আমি কি দিতে পারব বা সমাজে কি পরিবর্তন আমি আনতে পারব, আমি নিজে পরিবারের জন্য কি পরিবর্তন আনতে পারব। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে হাই স্কুলে লটারি করে ভর্তি হয়।

কেন ‘নির্বাচন নির্বাচন’ করেন : দ্রুত নির্বাচনের জন্য এতদিন তাগাদা দিয়ে এলেও এখন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলছেন, ন্যূনতম সংস্কার করেই নির্বাচন চান তিনি। নির্বাচন নিয়ে কেন এত মুখর, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি বলেন, আমাকে অনেকে ভুল বোঝে যে, আপনি এত নির্বাচন নির্বাচন করেন কেন। বিশেষ করে ছাত্ররা তো বলেই। এখানে কারণ একটাই, আমরা বিশ্বাস করি, আমি জানি না, এই বিষয় ভুল কিনা, যেকোনো নির্বাচিত সরকার কিন্তু অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে ভালো। আমার অ্যাঙেস থাকে, আমি যেতে পারি, কথা বলতে পারি। এখন আমার সেই জায়গাটা নেই।

ফখরুল আরও বলেন, নির্বাচনটার কথা এজন্য তাড়াতাড়ি বলি যে, নির্বাচনটা হলে দেশের সমস্যাগুলো চলে যাবে। একটা নির্বাচিত সরকার পিপলস ম্যান্ডেট নিয়ে বসবে। এরা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) তো এখন বসতে পারিনি, ওদের মধ্যে সেই কনফিডেন্স তো নাই। পিপলের ভাষাটা তো বুঝতে হবে। সেটা একটা নির্বাচিত সরকার সবচেয়ে ভালো বোঝে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

এখনই নির্বাচন করে ফেলতে হবে সেটা বিএনপি বলছে না দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ন্যূনতম যে সংস্কার, সেটা করে নিয়ে নির্বাচনটা করলে সমস্যাগুলো অনেকটা সমাধান হবে। সংস্কারের প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে। আমার বিশ্বাস যে, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা তিনি খুব শিগগিরই এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদেরকে ডাকবেন, একটা সমাধানের দিকে আসবেন, আলোচনা হবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা একটা জায়গায় পৌঁছাব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাসিনাকে ফেরত না দিলে প্রত্যর্পণ চুক্তি লঙ্ঘন হবে : আইন উপদেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধশাহ আমানত বিমানবন্দরে অগ্নি নির্বাপণ মহড়া