যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত উন্নত। এই উন্নত জাতি গড়ার দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষক। তিনি শিক্ষার্থীদের গুরু। কারণ তিনি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা–দীক্ষায় আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার গুরুদায়িত্ব পালন করেন। প্রতিটি শিক্ষিত মানুষের ভেতরে যে গঠনশীল মানুষ বাস করে, শিক্ষাগুরু তার জন্মদাতা। শিক্ষার্থীর জ্ঞানচক্ষু খুলে দেন শিক্ষক। একটি অশিক্ষিত জাতিকে শিক্ষাদানের মধ্য দিয়ে উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে শিক্ষকের ভূমিকাই প্রধান। অন্ধকার থেকে মানুষকে আলোর পথে নিয়ে যান তিনি। শিক্ষক জাতিকে সজীব করে তুলে। তারা পরম স্নেহে শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিমত্তা, সময়নিষ্ঠা, সত্যবাদিতা সদ্ব্যবহার, কর্তব্যনিষ্ঠা, উদারতা ন্যায়পরায়ণতা শিক্ষা দেন। পিতামাতার পরে শিক্ষকই শিক্ষার্থীদের প্রধান অভিভাবক। পিতামাতার পরেই যিনি মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য, তিনি হচ্ছেন শিক্ষক। তাই শিক্ষকদের সাথে এমন কোনো ব্যবহার করা উচিত নয়, যাতে তার মনে কষ্টের জন্ম হয়। কেননা, শিক্ষকদের শির চির উন্নত। শিক্ষক সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী। শিক্ষকদের মন থেকে শ্রদ্ধা–ভক্তি করা, মর্যাদা দেওয়া শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাঁদের আদেশ–নিষেধ, উপদেশ শিক্ষার্থীদের চলার পথের পাথেয়। শিক্ষক জাতির মর্যাদাবান ব্যাক্তি। ছোটবেলা থেকেই জেনে এসেছি শিক্ষকগণ জাতির মেরুদণ্ড মজবুত করার কাজে নিয়োজিত। জাতিকে শিক্ষিত করে তোলার ক্ষেত্রে তাঁদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় জীবনে তাঁদের প্রভাব অপরিসীম। গত কয়েকদিন ধরে শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ব্যবহার পুরো জাতিকে করেছে লজ্জিত। তের চৌদ্দ বছরের শিক্ষার্থীরা তাঁদের শিক্ষিকাকে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করানোর জন্য হাত ধরে টানাহেঁচড়া করেছে, যে ছাত্রটি তার শিক্ষককের গায়ে হাত তুলেছে সাধারণ মানুষ কখনো ভালোভাবে নেয়নি। শিক্ষকদের সাথে এমন অসভ্যতা কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারবেন না। এইভাবেই জোর জবরদস্তি করে শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য করা পুরো শিক্ষক সমাজের জন্য ভীতিকর অবমাননাকর উন্মুক্ত উদাহরণ জাতিকে একেবারে আক্ষরিক অর্থেই নিঃস্ব করে দিবে। এটা কোনোভাবেই ছাত্র–ছাত্রীদের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। কোনো শিক্ষককে অপসারণ করতে হলে যথাযত কর্তৃপক্ষ আছেন, তাঁদের দারস্থ হয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা উচিত। শিক্ষকদের মর্যাদা হানিকর এমন আচরণ কেনোভাবেই কাম্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সমাজ, রাষ্ট্রেও অকল্যাণ ডেকে আনে।