শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য চাই উন্নত প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়

শেখ বিবি কাউছার | বৃহস্পতিবার , ২৭ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ

এবার ২০২২ সালের শিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়-‘শিক্ষকদের হাত ধরেই শিক্ষা ব্যবস্থার রূপান্তর শুরু’। সময়ের সাথে সাথে শিক্ষায় আসছে নানান পরিবর্তন। তাই বদলাতে হচ্ছে শিক্ষা পাঠ্যক্রম ও শিক্ষা পদ্ধতি। ইন্টারনেটের বদৌলতে এখনকার শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবে আমাদের চেয়ে অনেক বেশি আপডেট। তাহলে ভাবুন তো আমাদের কতটা আপডেট হতে হবে শিক্ষার্থী কিংবা সন্তানদের স্বার্থে! বিশ্বের অনেক দেশে শিক্ষা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তারা মানসম্মত ও যুগোপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত করার স্বার্থে ইন্ডাস্ট্রির মালিকদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন।
আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে, সিঙ্গাপুরেও শিক্ষকদের জন্য উন্নত মানের প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা একাডেমি রয়েছে। আমাদের দেশেও গড়ে তোলা প্রয়োজন একটি যুগোপযোগী ‘শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়’। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় যে স্তরেই শিক্ষকতা করুক না কেন তাদের সকলের মধ্যে পারস্পরিক জ্ঞান বিনিময়ের জন্য একটা যোগাযোগ মাধ্যম থাকা প্রয়োজন। সেই যোগাযোগের সুযোগটা তৈরি করে দিতে পারে প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাথমিক বা মাধ্যমিকে কী ধরনের শিক্ষা দিলে তা কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রভাব বিস্তার করবে তা নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ থাকতে পারে এই প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপর প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে শুধু তাই নয়, সেখানে সারা বছরব্যাপী সর্বস্তরের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ চলমান থাকতে পারে, আরো থাকতে পারে শিক্ষণ-শেখানো কৌশল ও পদ্ধতি, গবেষণা, বিজ্ঞান ও আইসিটি ল্যাব পরিচালনা, ভাষাগত দক্ষতা উন্নয়ন, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, কারিকুলাম ডিজাইন, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি ও ধরণ, তথ্য প্রযুক্তির ইতিবাচক ব্যবহার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, পেশাগত চর্চার উন্নয়ন, ব্যক্তির দক্ষতা বিকাশ, আচার-আচরণ, শৃঙ্খলা এক কথায় শুদ্ধাচার, যোগাযোগ দক্ষতা, নেতৃত্বের উন্নয়ন, চাকরি বিধি, নৈতিকতা, সৃজনশীল উদ্ভাবন সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার দক্ষতা থাকতে পারে বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও। শিক্ষকদের গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্য দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষক দিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকতে পারে এই প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সে ধরনের প্রশিক্ষণ পেলে উপকৃত হবে শিক্ষক সমাজ। শিক্ষকদের আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য এধরনের প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি এখন সময়ের দাবি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্লেন্ডেড শিক্ষায় প্রাথমিক শিক্ষকদের ভূমিকা
পরবর্তী নিবন্ধবাস্তবতা ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা