শিকলবাহায় আনসার আল ইসলামের গোপন বৈঠক, দুই সদস্য আটক

নতুন জঙ্গি সংগঠন শাহাদাতের নামে সদস্য সংগ্রহ

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৫ জুন, ২০২৪ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের দুই সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব। গতকাল শুক্রবার কর্ণফুলী থানাধীন শিকলবাহা ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে গোপন মিটিংয়ের সময় তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একাধিক জিহাদি বই এবং অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়। আটকরা হলেন পঞ্চগড় জেলার মো. আসাদুজ্জামান আসিফ (২২) ও পাবনা জেলার মোহাম্মদ আহাদ (২১)

র‌্যাব জানায়, গত ২৩ মে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব৩ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর গুলিস্তান ও সাইনবোর্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আনসার আল ইসলামের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তারা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামে যোগদান করে। এরপর র‌্যাবের তৎপরতায় কার্যক্রম কিছুটা স্থিমিত হয়ে পড়লে ‘শাহাদাত’ নামে নতুন একটি জঙ্গি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর থেকে এ সংগঠনের নামে নতুন সদস্য সংগ্রহসহ নানা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল।

র‌্যাব আরও জানায়, বর্তমানে এ সংগঠনের সদস্য সংখ্যা শতাধিক। যোগাযোগের জন্য তারা বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে। বিশেষ করে ‘বিপ’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ তাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এটি তাদের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায় ‘শাহাদাত’ গ্রুপটি সালাহউদ্দিন নামে এক প্রবাসীর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তিনি বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন। এই গ্রুপের অন্যান্য সদস্যরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও চট্টগ্রাম র‌্যাবের একটি আভিযানিক দল কর্ণফুলী থানার শিকলবাহা ইউনিয়ন এলাকা থেকে দুজনকে আটক করে।

চট্টগ্রাম র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উল আলম বলেন, আটক হওয়া অভিযুক্তরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা বিভিন্ন উগ্রবাদী নেতাদের উস্কানিমূলক বক্তব্য শুনে জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করে। পরবর্তীতে তারা নিজেরা ‘শাহাদাত’ গ্রুপের নামে সদস্য সংগ্রহ ও দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা। এই লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে ভুল বুঝিয়ে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে। এরপর তাদের বিভিন্ন অপব্যাখ্যা ও মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে দেশের বিচার ও শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিতৃষ্ণা তৈরি করে ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য উগ্রবাদী করে তুলে।

তিনি আরও বলেন, নতুন সদস্যদের তারা বিভিন্ন উগ্রবাদী বই পড়ানো ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সরবরাহ করত। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তারা মসজিদ, বাসা বা বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের নিয়ে গোপন সভা পরিচালনা করত এবং সংগঠনের সদস্যদের শারীরিক প্রশিক্ষণ প্রদান করত। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে চট্টগ্রাম, কঙবাজার, যশোর, সাতক্ষীরাসহ ঢাকার আশেপাশের বিভিন্ন এলাকাকে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য নির্ধারণ করেছে বলে জানা গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়ির হাট-বাজারে পাকা কাঁঠালের ঘ্রাণ
পরবর্তী নিবন্ধএকটি ছড়ায় পাঁচ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ