শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের ইন্তেকাল

| বৃহস্পতিবার , ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক সময়ের আলোচিত চরিত্র শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন আর নেই। ৮৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গতকাল বুধবার রাতে তিনি মারা গেছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। খবর বিডিনিউজের। সর্বশেষ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানের পদে ছিলেন শাহ মোয়াজ্জেম। তবে বাংলাদেশে ক্ষমতায় যাওয়া সবগুলো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কখনওবা কখনও যুক্ত ছিলেন তিনি। নৌকা, ধানের শীষ, লাঙ্গল, সব প্রতীকে শুধু ভোটই করেননি তিনি, প্রায় সব দলের সরকারে মন্ত্রীও ছিলেন।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বলেন, রাত সাড়ে ৯টায় গুলশানে নিজের বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। শাহ মোয়াজ্জেমের মৃত্যুতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শাহ মোয়াজ্জেম এক মেয়ে, এক ছেলে রেখে গেছেন। তার স্ত্রী আগেই মারা যান।
শাহ মোয়াজ্জেমের জন্ম ১৯৩৯ সালের ১০ জানুয়ারি মুন্সিগঞ্জের দোগাছি গ্রামে। পাকিস্তান আমলে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতে খড়ি তার; ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাসের পর আইএ পাস করেন ঢাকা কলেজ থেকে। পরে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তখন ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন শাহ মোয়াজ্জেম। ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ১৯৫৮ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন, পরে সভাপতিও নির্বাচিত হন। তখন অনেকবারই জেল খাটতে হয়েছিল তাকে। ছাত্রজীবন শেষে শাহ মোয়াজ্জেম আওয়ামী লীগেই মনোনিবেশ করেন। স্বাধীনতার পর প্রথম সংসদে তাকে চিফ হুইপ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর খন্দকার মোশতাক আহমেদের মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগের যে কজন শপথ নিয়েছিলেন তাদের একজন শাহ মোয়াজ্জেম। পরে সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদের সঙ্গে ভেড়েন শাহ মোয়াজ্জেম; তার সরকারে উপ-প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি, জাতীয় পার্টির মহাসচিবও করা হয়েছিল তাকে। এরশাদের প্রশংসা আর বিরোধী দলের নিন্দা জানিয়ে শাহ মোয়াজ্জেমের তখনকার নানা মন্তব্য ছিল ব্যাপক সমালোচিত। তবে ১৯৯২ সালে শাহ মোয়াজ্জেমকে জাতীয় পার্টি থেকে এরশাদ বহিষ্কার করলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। এরপর মৃত্যু পর্যন্ত তিনি বিএনপিতে থাকলেও রাজনীতিতে তার আগের গুরুত্ব আর ফিরে আসেনি। লেখালেখিও করতেন শাহ মোয়াজ্জেম। তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে- ‘নিত্য কারাগারে’, ‘বলেছি বলছি বলবো’, ‘ছাব্বিশ সেল’, ‘জেল হত্যা মামলা’।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে চোর চক্রের সদস্য আটক
পরবর্তী নিবন্ধচুয়েট উপাচার্য সকাশে রাঙ্গুনিয়া স্টুডেন্টস ফোরাম নেতৃবৃন্দ