শারদীয় দুর্গোৎসবে আজ মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা

সপ্তমীতে মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড়

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৮:০৪ পূর্বাহ্ণ

শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা আজ। অষ্টমীর সকালে দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা করবেন ভক্তরা। অষ্টমী তিথির পূজায় নয়টি পাত্রে বিভিন্ন রঙের পতাকা স্থাপন করা হয়, যা দেবীর নয়টি শক্তিকে উৎসর্গ করে করা হয়। পূজা শেষে দেবী দুর্গাকে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করা হয়। অষ্টমী শেষ হবে সন্ধি পূজার মধ্যদিয়ে। অষ্টমী ও নবমী তিথির সন্ধিক্ষণে এই সন্ধিপূজা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবছরের মতো এবারও নগরের পাথরঘাটায় পাথরঘাটাস্থ শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দির পূজামণ্ডপে মহাঅষ্টমীর দিনে আয়োজন করা হয়েছে কুমারী পূজা। আজ সকালে নির্দিষ্ট কুমারীকে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হবে। ফুলের মালা, চন্দন ও নানা অলংকারপ্রসাধন উপাচারে নিপুণ সাজে সাজানো হবে কুমারীকে। মাতৃরূপে পুজিত হবেন কুমারী দেবী। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় শ্রীমৎ শ্যামল সাধু মোহন্ত মহারাজের তত্ত্বাবধানে এ কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়েছে।

পাঁচ দিনের শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে এখন আনন্দমুখর পরিবেশ। গতকাল সোমবার ছিল শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী। মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপাচারে অর্থাৎ ষোলটি উপাদানে দেবী দুর্গার পূজা করা হয়। পূজার শুরুতেই দেবী দুর্গার প্রতিবিম্ব আয়নায় ফেলে বিশেষ ধর্মীয় রীতিতে স্নান করানো হয়। এরপর করা হয় নবপত্রিকা স্থাপন। নবপত্রিকার আরেক নাম কলাবৌ স্নান। দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা করেন মণ্ডপের পুরোহিতগণ। পূজা শেষে হাতের মুঠোয় ফুল, বেলপাতা নিয়ে ভক্তরা মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে অঞ্জলি দেন দেবীর পায়ে। ঢাকের বাদ্য, কাঁসর ঘণ্টা আর শঙ্খধ্বনিতে দেবীর আরাধনায় সামিল হন নানান বয়েসী ভক্তরা।

শাঁখের ধ্বনি আর ঢাকের বাদ্যিতে ভক্তদের পদচারণায় গতকাল ভোর থেকে মুখর ছিল শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমীর পূজামণ্ডপ। সন্ধ্যার পর থেকে চট্টগ্রামের মণ্ডপগুলোতে ভক্তদের ভিড় আরো বাড়ে। বিশেষ করে নগরীর থিমভিত্তিক মণ্ডপগুলো ছিল লোকে লোকারণ্য। মহাসপ্তমীতে বিকালের পর থেকে মণ্ডপগুলোতে ভক্তদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস বেড়ে যায়। গভীর রাত পর্যন্ত মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা দর্শনে নানা বয়েসী ভক্তদের ভিড় লেগে থাকে। চট্টগ্রাম নগরীর জেএমসেন হল, রামকৃষ্ণ মিশন, কৈবল্যধাম, প্রবর্তক সংঘ বাংলাদেশ, হাজারী গলি, গোসাইল ডাঙা, কুসুম কুমারী বিদ্যালয়, চেরাগি পাহাড়সহ মহানগরীর ১৬ থানায় ২৯৩টি মণ্ডপে এবং জেলার ১৫টি উপজেলায় ২ হাজার ১৬৫টি মণ্ডপে প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তায় নির্বিঘ্নে চলছে পূজা আর্চনা। পূজামণ্ডপের মধ্যে আনোয়ারায় ২৯৯টি, কর্ণফুলীতে ২৮টি, মীরসরাইয়ে ৯০টি, সীতাকুণ্ডে ৬৭টি, সন্দ্বীপ ৩০টি, ফটিকছড়িতে ১২৩টি, হাটহাজারীতে ১১৪টি, রাউজানে ২২৮টি, রাঙ্গুনিয়ায় ১৬১টি, বোয়ালখালীতে ১৪৬টি, পটিয়ায় ১৯৫টি, চন্দনাইশে ১২৮টি, সাতকানিয়ায় ১৮৪টি, লোহাগাড়ায় ১১১টি, বাঁশখালীতে ২৫০টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পূজা উদযাপনের সার্বিক নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অধিকাংশ মণ্ডপে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। সপ্তমী পূজায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে চলে ভক্তিমূলক সংগীত, রামায়ণ পালা, আরতিসহ নানা আয়োজন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাবেক এমপি বাদল ও বুবলী কারাগারে
পরবর্তী নিবন্ধদুর্গাপূজায় যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে প্রস্তুত র‌্যাব