“সম্প্রীতির ঐকতানে, গাহি সাম্যের গান। শুধু ধর্ম নয় মানুষ, বিদ্বেষ নয় সম্প্রীতি।” এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের উদ্যোগে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৫ উপলক্ষে জেলা ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মো: সাইফুল ইসলাম সানতু। তিনি বলেন, “দুর্গাপূজা শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐতিহ্যের এক অনন্য প্রতীক।”
তিনি আরও জানান, পূজা উপলক্ষে জেলার প্রতিটি পূজা মণ্ডপে শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশ সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
মতবিনিময় সভায় জেলা ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সার্কেল অফিসার এবং থানার অফিসার ইনচার্জরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রায় ১০০ জন অংশগ্রহণ করেন।
সভায় পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা, স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
সভায় নিম্নোক্ত নির্দেশনা গুলো প্রদান করা হয়:
১। পূজা কমিটির ভেটিংকৃত ভলান্টিয়ারদের তালিকা সংশ্লিষ্ট অফিসার ইনচার্জদের নিকট দিতে হবে।
২। প্রত্যেক পূজা মন্ডপে ডিভিআর সহ CCTV/IP Camera স্থাপন করতে হবে।
৩। পূজা কমিটি কর্তৃক মনিটরিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।
৪। নির্দিষ্ট স্থানে ভলান্টিয়ারদের সহযোগিতায় গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা করতে হবে।
৫। প্রত্যেক থানায় ফোকাল পয়েন্ট এবং পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা থাকবে।
৬। থানা ও জেলায় Quick Response Team গঠন করা হবে। যাতে কোন ঘটনা ঘটলে দ্রুত Response করা যায়।
৭। এলাকায় কোন দুষ্কৃতিকারী (যারা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে ধারাণা করা হয়) থাকলে তাদের তালিকা পুলিশকে সরবরাহ করতে হবে।
৮। Socal Media গুজব হতে সর্তক থাকতে হবে। যেসব লিংক হতে গুজব ছড়ানো হয় দ্রুত সেকল লিংক ডিলেট করতে হবে।
৯। পূজা উদযাপন পরিষদের কমিটি সংক্রান্তে বিরোধ থাকলে তা দ্রুত মিমাংসা করতে হবে।
১০। কোথাও কোন সমস্যা হলে তা নিয়ে অপ্রীতিকর কোন ঘটনার অবতারণা না করে পুলিশ সুপার অথবা পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের দ্রুত অবহিত করতে হবে।
১১। পূজা মন্ডপের সামনে ও পেছনে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। বিদ্যুৎ চলে গেলে দূর্ঘটনা এড়ানোর জন দ্রুত জেনারেটর ও চার্জার লাইটের ব্যবস্থা করতে হবে।
১২। নির্বিঘে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক একজন জেনারেটর অপারেটর উপস্থিত থাকতে হবে।
১৩। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সম্প্রীতি কমিটি গঠন করে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তারা সার্বক্ষণিক পূজা মন্ডপের খোঁজ-খবর নিবেন।
১৪। পূজা মন্ডপের আশেপাশে রাস্তা ও ফুটপাতের অবৈধ দোকান উচ্ছেদ এবং রাস্তায় গাড়ি পার্কিং বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১৫। পূজা উপলক্ষে কোন মেলা কিংবা অন্য কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে।
১৬। নির্ধারিত সময়ে প্রতিমা বিসর্জন সমাপ্ত করতে হবে।
১৭। যে কোন পরিস্থিতিতে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করুন।
পুলিশ সুপার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ বছর দুর্গাপূজা হবে শান্তিপূর্ণ, আনন্দঘন এবং সম্প্রীতিময়।