বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর সবচাইতে বেশি সমালোচনা হয়েছে পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমকে নিয়ে। দলের সিনিয়ররা তাকে অধিনায়কত্ব ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অধিনায়কের পদ ছেড়েছেন বাবর আজম। এমনিতেই বিশ্বকাপের পর পাকিস্তান ক্রিকেটে বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছিলো। তারই ধারাবাহিকতায় টেস্টে শান মাসুদ ও টি–টোয়েন্টি দলের নতুন অধিনায়ক হিসেবে শাহিন শাহ আফ্রিদির নাম ঘোষণা করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। একইসাথে কোচিং প্যানেলেও পরিবর্তন এসেছে। পিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল তারা বাবর আজমকে সীমিত ওভারের দায়িত্ব থেকে বাদ দিলেও টেস্ট দলের অধিনায়ক হিসেবে বহাল রাখতে চান। কিন্তু লাহোরে পিসিবি প্রধান জাকা আশরাফের সাথে আলোচনা শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আজম বলেছেন সব ধরনের ফর্মেটের অধিনায়কের পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন। এটা সত্যিই কঠিন সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমি মনে করি এই মুহূর্তে এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। শুধুমাত্র একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমি তিন ফর্মেটে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। এখন এই শান মাসুদ আর শাহীন শাহ আফ্রিদিকে নিয়ে নতুন পথ চলা শুরু করতে চায় পাকিস্তান।
২৯ বছর বয়সী আজম ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। এবারের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলতে না পরার ব্যর্থতা থেকেই তার পদ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। বাবর আজম বলেন আমি এখানে নতুন অধিনায়ককে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। একইসাথে দলকে আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে সাহায্য করতে চাই। গুরুত্বপূর্ণ এই দায়িত্বে পিসিবি আমার ওপর আস্থা রাখায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বাবরের এই ঘোষণার পরপরই টেস্ট দলের অধিনায়ক হিসেবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত মাসুদকে ও টি–টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে শাহিন শাহ আফ্রিদির নাম ঘোষণা করা হয়। যদিও আফ্রিদির মেয়াদকাল নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে ২০২৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত তিনি অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করবেন। সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ হাফিজকে মিকি আর্থারের জায়গায় নতুন টিম ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। হাফিজ পাকিস্তানের হয়ে ৫৫ টেস্ট, ২১৮ ওয়ানডে ও ১১৯ টি–টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। বিশ্বকাপের আগে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের নাম্বার ওয়ান ব্যাটার ছিলেন বাবর। কিন্তু বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে ৩২০ রান করে নিজেকে প্রমাণে ব্যর্থ হবার পর ভারতীয় ওপেনার শুভমান গিলের কাছে সেই স্থান হারিয়েছেন। এ পর্যন্ত বাবরের নেতৃত্বে পাকিস্তান ২০ টেস্টে ১০ জয়, ৬ পরাজয় ও চারটিতে ড্র করেছে। ৪৩ ওয়ানডেতে ২৬ জয়, ১৬ পরাজয় ও একটি পরিত্যক্ত হয়েছে। ৭১ টি–টোয়েন্টি ম্যচে তার অধীনে পাকিস্তান ৪১টি ম্যাচে জিতেছে আর ২৩ ম্যাচে হেরেছে। সাতটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।