চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, জনজীবন স্বাভাবিক করে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনায় আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলায় ১৭টি ও মহানগরের ১৬টি–সহ মোট ৩৩টি থানা রয়েছে। আমরা যদি অন্তত থানা প্রতি ৫ জন স্বেচ্ছাসেবক পাই, তবে ধীরে ধীরে থানাগুলোতে স্বাভাবিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পুলিশ সদস্যদের কর্মস্থলে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
গতকাল নগরীর সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে দ্বিতীয় দফায় অনুষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সাথে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক এ কথা বলেন। সভায় শিক্ষার্থীদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরের সর্বমোট ৩৩টি থানার পাশাপাশি উপজেলা পরিষদসমূহ, কোর্ট বিল্ডিং–সংলগ্ন এলাকা, ধর্মীয় উপাসনালয়সমূহ, সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম ওয়াসা, বিদ্যুৎ অফিসসমূহে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।
সভায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা, দক্ষিণ জেলা ও মহানগরের জন্য ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে জেলা প্রশাসনের তিনজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সাথে শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে সমন্বয় করে বাজার মনিটরিংয়ে দুইজন ম্যাজিস্ট্রেট, অভিযোগ গ্রহণে দুইজন ম্যাজিস্ট্রেট এবং লস্ট এন্ড ফাউন্ড টিমে দুইজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। গৃহীত কার্যক্রমসমূহের সফল বাস্তবায়নে একটি সুনির্দিষ্ট টাইমলাইন নির্ধারণ করে সে মোতাবেক অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়।
সভায় উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, আমাদের প্রতিপক্ষ পুলিশ নয়, আমাদের প্রতিপক্ষ সকল ফ্যাসিস্টরা। জনজীবন স্বাভাবিক করতে ছাত্রদের সাথে জেলা প্রশাসনের সমন্বয় খুবই জরুরি। এ সময় তিনি ট্রাফিক কন্ট্রোলে বিএনসিসি, রোভার স্কাউট এবং স্কাউটদের সাথে শিক্ষার্থীরা সমন্বয় করে কাজ করবে বলে জানান।
সভায় উপস্থিত অন্যান্য সমন্বয়কদের বক্তব্যে থানা ও কারাগার থেকে লুন্ঠিত অস্ত্র দ্রুত উদ্ধারের প্রয়োজনীয়তা উঠে আসে এবং এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাকিব হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক এবং শিক্ষা ও আইসিটি) মো. সাদিউর রহিম জাদিদ ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) একেএম গোলাম মোর্শেদ খান।
এর আগে গত বৃহস্পতিবারও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে জেলা প্রশাসক মতবিনিময় করেন। জেলা প্রশাসনসূত্র জানায়, এমন মতবিনিময় সভা সপ্তাহে অন্তত একবার করা হবে।