নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে ক্যাম্পাসে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শাটডাউন কর্মসূচিতে এ আল্টিমেটাম দেন তারা। এই আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, শিক্ষক ও কর্মকর্তা–কর্মচারীরা সমর্থন জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা উপাচার্য পদে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের নিয়োগ না দেওয়ারও দাবি জানান। দাবি মেনে না নিলে প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ করা ও রাস্তা অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। শাটডাউন কর্মসূচি শুরুর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। কার্যত অচল রয়েছে সিভাসু ক্যাম্পাস। সিভাসুর শিক্ষার্থীরা জানান, সিভাসুতে নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেকোনো জ্যেষ্ঠ অধ্যাপককে ভিসি নিয়োগের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে আমরা শিক্ষার্থীরা লাগাতার আন্দোলন করে আসছি। গতকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক শাটডাউন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও শিক্ষার্থীদের সাথে কর্মসূচি পালন করবেন। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সিভাসু পরিবারের সর্বস্তরের শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা–কর্মচারীরা শহীদ মিনারের সামনে সমবেত হয়ে শাটডাউন কর্মসূচি পালন করবেন জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগের এক দফা দাবিতে টানা পাঁচ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সিভাসুর শিক্ষার্থীরা। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করেন তারা। তার আগে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর উপাচার্য নিয়োগের আবেদন জানিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। একই দাবি নিয়ে শনিবার শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষককে আমাদের ভিসি হিসেবে মানব না। আবার অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ সিভাসুর ভিসি হওয়ার পাঁয়তারা করলে তাকেও মানব না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দিতে হবে আমাদেরই শিক্ষকদের মধ্য থেকে। আগের ভিসিরা রুটিন ওয়ার্ক করে চলে গেছেন, কোনো কাজ করেননি।
জানা যায়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল সকালে জরুরি সভা ডাকেন সিভাসুর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামাল। উপাচার্যের সভাপতিত্বে তার অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সকল ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, হল প্রভোস্ট, পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) এবং প্রক্টরসহ সিনিয়র শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান পরিস্থিতি এবং আগামী ২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার স্বার্থে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠতম অধ্যাপকদের মধ্য থেকে নতুন উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে অভিমত ব্যক্ত করা হয়। এ বিষয়ে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে বলে সভায় শিক্ষকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে সিভাসুর রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরকে ফোন করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।